আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। আসন্ন এই পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে লালমনিরহাটে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট গুলো। হাটগুলোতে পশুর আমদানি বাড়ায ক্রেতাসহ গরু ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।
লালমনিরহাট জেলার অন্যতম পশুর হাট হিসেবে পরিচিত বড়বাড়িহাট, দুড়াকুটিহাট, নবাবেরহাট (বিডিআরহাট), নয়ারহাট। এই হাট গুলোতে বিশাল বিশাল আকৃতির গরু, ছাগল ও ভেড়া নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। জেলার সব থেকে বড় পশুর হাট বড়বাড়িহাট আর এখানে সপ্তাহে একদিন হাট বসায় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কেনাবেচা। এখানে দেশীয় গরুর পাশাপাশি শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের গরু ও মহিষ বেচাকেনা হয়ে থাকে এই হাঁটে।
জেলার অন্যতম এই পশুর হাটগুলো জমে ওঠা বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত যেমন ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার গরু ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিত চোখে পড়ার মতো। এবার হাটে অপেক্ষাকৃত ছোট গরুর চাহিদা বেশি।
একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত সময়ের চেয়ে এ বছর গরু, মহিষের দাম স্বাভাবিক সময়ের থেকেও বেশি। স্থানীয় গরু খামারি ও বিক্রেতাদের দাবি, গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় পশুপালনে খরচ বেড়েছে। এজন্য পশুর দামটা একটু বেশি। সর্বোপরি বাজারের উচ্চ মূল্য সব কিছুর দাম বেশি হযওয়ায় গরুর দামও একটু বেশি।
বড়বাড়ি হাটে গরু বিক্রি করতে এসে লালমনিরহাট সদরের গরু খামারি সোবাহান মোল্লা বলেন, এবার ৯টি গরু হাটে তুলেছি কিন্তু মাত্র তিনটি গরু বিক্রি করেছি। তাতে যা বুঝলাম এবার ছোট গরুর চাহিদা বেশি। তিনটি গরু বিক্রি করে কত টাকা লাভ হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, লাভ হবে তবে সীমিত, যতটা আশা করেছিলাম ততটা হবে না। চোরাই ভাবে ভারতীয় কিছু গরু হাটে উঠেছে তাই লাভ অনেক খানি কমে গেছে বলেও জানান তিনি।
কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে গরু কিনতে আসা লালমনিরহাট সদর উপজেলা বজলুর রহমান বলেন, কোরবানির ঈদের জন্য গরু কিনতে এসেছি ভাগে গরু কিনবো তাই তিনজন এসেছি। বাজার ঘুরে দেখলাম গত বারের থেকে এবার গরুর দাম মোটামুটি বেশি। তবে গরুর আকার ও ওজন অনুযায়ী আমরা যে আনুমানিক দাম নির্ধারণ করে থাকি, তাতে গরুর দাম বেশি বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাটেনারি মেডিকেল টিম রয়েছে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যেবক্ষণের দায়িত্বে। ভ্যাটেনারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার মোঃ সুলতানুল আরিফিন বলেন, আমরা লালমনিরহাটের সব গরুর হাট গুলোতে ক্যাম্পিং করতেছি। কোন ক্রেতার কোন গরুকে নিয়ে সন্দেহ থাকলে যদি আমাদেরকে অবগত করে, সেই গরুটি আমরা পরীক্ষা করে দেখি। আর কোনো রোগ আছে কিনা বা ইত্যাদি কোন সমস্যার বিষয়ে ক্রেতাকে অবগত করে থাকি।
এদিকে হাটের ইজারাদার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হাটের সার্বিক নিরাপত্তায় অনেক রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের যেন কেউ কোন কারণে প্রতারিত করতে না পারে সেজন্য আমাদের নিজস্ব লোক েিনৗগ দেয়া আছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও হাটে থাকেন।