ইতিমধ্যে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদযাত্রায় মানুষ প্রধানত সড়ক ও নৌপথের ওপরই ভরসা করেন। এ অবস্থায় সড়ক ব্যবস্থাপনা যদি ঠিকঠাকমতো না হয়, অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই সড়ক ও নৌপথে বাড়তি নজরদারির প্রয়োজন। ঈদযাত্রার বিড়ম্বনার কারণ হিসেবে, যাত্রীদের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা কমকেই দায়ী করা হচ্ছে। সম্প্রতি ট্রেনের সংখ্যা কিছুটা বাড়ানো হলেও প্রয়োজনের তুলনায় কম। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলে নৌপথে যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। শুধু বরিশালমুখী যাত্রী কমলেও আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোর প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে বিভিন্ন গন্তব্যে যাবেন। তাদের মধ্যে তিন লাখ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর হয়ে যাবেন। অতীতে ঈদের সময় ফেরিঘাটে যে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো, সেটি এখন আর হয় না। তবে যানজটের সৃষ্টি হয়। আর এ যানজটের কারণ হিসেবে ঈদের সময় অনেক বেশি ও বিচিত্র ধরনের যানবাহন সড়কে নামানো হয় বলেই যানজটের আশঙ্কা বেড়ে যায়। যানবাহনগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে। আর সে সুযোগে একশ্রেণির ছিনতাইকারী ও ডাকাত হামলে পড়ে। এবারও যাতে সে রকম কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে হাইওয়ে পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে এবং টার্মিনালসহ নৌপথে সর্বোচ্চ নজরদারি ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান করছি। যেসব সড়কে সংস্কারকাজ চলছে, সেসব সড়কে বাড়তি নজরদারি বাড়োতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে যদি কোনো সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে দ্রুত মেরামত করতে হবে। সড়কে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে যে নিয়মকানুন আছে, অনেকেই তা মানেন না। ফলে দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও ব্যক্তিদের আরও বেশি সজাগ থাকতে হবে। কেননা বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে চালকের বেপরোয়া যান চালনা ও পথচারীদের অসতর্কতার কারণে। পশুবাহী পরিবহন যতটা সম্ভব মূল সড়কগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। সড়ক-মহাসড়কের ওপর পশুর হাট বসানোর বদভ্যাসও ত্যাগ করতে হবে। কারও সুবিধার জন্য অন্যান্যের বিপদে ফেলা যাবে না। আনন্দের ঈদযাত্রা যেন শোকের যাত্রা না হয়, সে বিষয়ে পরিবহনমালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।