মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নদী ভাঙনের কবলে পরে বিলীনের পথে মন্দিরসহ শতাধিক ঘর-বাড়ি। আতঙ্কে রয়েছে তালতলা ডহুরী গৌরগঞ্জ খালের (ইছামতি নদীর শাখা) পাড় এলাকাবাসী। উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ নাটেশ্বর গ্রাম এখন ভাঙনের কবলে। নদীর পানি ও স্রোতের চাপ বৃদ্ধি সেই সাথে বিভিন্ন ট্রলার, বালুবাহী বাঙ্কহেড চলাচলের কারণে ভাঙনের মাত্রা বেড়ে চলছে।
জানা যায়, গত বছর প্রায় ২৫ টি পরিবারের বাড়ি ঘর ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এ বছর আশঙ্কা করা হচ্ছে এভাবে ভাঙতে থাকলে ২/১ মাসের মধ্যে বিলীন হয়ে যাবে গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার অর্ধাংশ। গত ১৫ দিনে দৈর্ঘ্যে প্রায় ৩ শত মিটার ও প্রস্থে কোথাও ৪ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত ভেঙেছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে কমপক্ষে ৫০ টি পরিবারের ভিটে মাটির চিহ্ন আর থাকবে না। মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে ২ শত বছরের পুরনো জেলে পাড়া। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
স্থানীয়রা অনেকে জানান, গত ২০/২৫ বছরে গৌরগঞ্জ খালটি ভাঙতে ভাঙতে পশ্চিমে চলে এসেছে। এতে বিলুপ্ত হয়েছে অনেক বাড়ি-ঘর, অনেক পরিবার এলাকা ছাড়া হয়েছে। বর্তমানে নাটেশ্বর দক্ষিণ পাড়ায় বসবাস করছেন দেড় শতাধিক পরিবারের হাজারের বেশি মানুষ। এখানে এখনো ৫০ টি পরিবারের বেশি রয়েছে সনাতন ধর্মালম্বী, বর্তমান পাড় ঘেষে রয়েছে একটি পাকা মহাদেব মন্দির, পাশে ৬/৭ ফুট ভাঙলেই মন্দিরটি চলে যাবে নদী গর্ভে। মহিলারা অনেকে জানান, নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তাদের। শিশু শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা সব সময় ভয়ে থাকে, তাদের ঘর কখন যে ভেঙে যায় পানির স্রােতে। আবার কেউ কেউ নিজস্ব অর্থায়নে বাঁশের বেড়া দিয়ে বালু ফেলে ভাঙন রোধের চেস্টা করেছেন কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। তাদের দাবী সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তাদের আর বসবাসের মতো কোথাও জায়গা নেই, তারা নিঃস্ব হয়ে যাবেন।
ভাঙন কবলিত এলাকায় বসবাস করেন ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আওলাদ হোসেন, তিনি জানান, গত বছর মুন্সীগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। কেউ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এবছর যদি দ্রুত কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে অত্র অঞ্চলের কৃষিতে অবদান রাখা ও এই অঞ্চলের মানুষের মাছের চাহিদা মেটানোর মত ভুমিকা রাখা একটি বিরাট অংশ হারিয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরীফুল আলম তানভীর জানান, আপনারা জানেন আমি গত বছর যোগদানের পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ডহুরী-তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের মালখানগর ইউনিয়নের ফেগুনাসার গ্রামে জিও ব্যাগ ভেলে ভাঙন রোধ করা হয়েছে। তখন আমরা উপজেলা প্রশাসন কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি, পানি উন্নয়ন বোর্ড যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে, এর সুফল আমরা পেয়েছি। এখন পানি বৃদ্ধি পাঁচ্ছে ভাঙনের প্রবনতা বাড়ছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে আজকেই যোগযোগ করবো, যাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।