রাজশাহীতে আগুনে পুড়ে এক স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। আগুনে তার দুই ছেলেও দগ্ধ হন। পরে তারা তিনতলা থেকে লাফিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। শুক্রবার ভোরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামের মাদারীগঞ্জ বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম ফরিদা ইয়াসমিন (৪৫)। তিনি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শিবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। আহত দুই ছেলের নাম রাশেদুল বাশার (২৫) ও রাফিউল বাশার (১৮)। তাদের বাবার নাম এজাজুল বাশার স্বপন। তিনি দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী।
স্থানীয়রা জানান, দুই ছেলের মধ্যে রাশেদুল রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। রাফিউল উচ্চমাধ্যমিকপাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় এজাজুল বাশার বাড়িতে ছিলেন না। ঈদের ছুটিতে তিনি গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বাগমারা স্টেশনের কর্মকর্তা মেহেদি হাসান জানান, ভবনের দুই তলায় রান্নাঘর ছিল। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভবনে আগুন লাগার পর স্থানীয়রা নেভানোর চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। পরে তিনতলার একটি কক্ষে নিহত স্কুলশিক্ষিকার মরদেহ পাওয়া যায়। নিচে আহত অবস্থায় পড়েছিলেন তার দুই ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে নিহত নারীর স্বজন জাকিরুল ইসলাম জানান, আগুনে দগ্ধ হওয়ার পর দুই ছেলে তিনতলা থেকে লাফ দেন। এতে তারা আরও আহত হন। এরপর তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, রাফিউলের শরীরের ৫০ শতাংশ ও রাশেদুলের শরীরের ২২ শতাংশ পুড়ে গেছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে দুই ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, স্কুল শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। এরপর আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, যে বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেটি একসময় ‘আশা’ নামে সিনেমা হল ছিল। হল বন্ধ হওয়ার পর এজাজুল বাশার কিনে নেন। এর তিনতলায় তিনি পরিবার নিয়ে থাকতেন। এই ভবনে কয়েকজন ভাড়াটেও ছিলেন। তবে ঈদের কারণে তারা গ্রামে গেছেন। এ ছাড়া ভবনটি গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হতো।