গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রচন্ড জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কালভার্ট ও রিং পাইপের মুখ বন্ধ করে মাটি ভরাট, বাড়ি বা স্থাপনা নির্মানের কারণে এসব জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। এতে ফসলী জমি বিশেষ করে শত শত বিঘা সবজি ও কলা বাগানে জলাবদ্ধতার কারণে মারাত্মক ভাবে ফসলহানীর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অসহায় নিরিহ কৃষক জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেতে ইউএনওর দ্বারস্থ হয়েছেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং তৎক্ষনাৎ নির্দেশে ভেঙে পড়া রিং পাইপ, কালভার্টের মাটি সরিয়ে জলাবদ্ধতার হাত থেকে ফসল রক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।
রোববার উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের বড়ইতলা, নয়াপাড়া ও চারালদিয়া গ্রামের একদল কৃষক জলাবদ্ধতার হাত থেকে ফসল রক্ষার দাবী নিয়ে ইউএনওর নিকট আসেন। তিনি তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং নষ্ট হয়ে পড়া রিংপাইপ থেকে মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বড়ইতলা গ্রামের কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, তিন বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেছেন। টানা বর্ষণে তার জমিসহ শত শত বিঘা জমির ফসল জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত। পানি সরাতে না পারলে ব্যাপক ভাবে ফসলহানী ঘটতে পারে। কৃষক রায়হান বলেন, দুই বিঘা জমিতে শসা, কুমড়া আবাদ করেছেন। সবে মাত্র ফসল তুলতে শুরু করেছেন। কিন্তু জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরাতে না পারলে শিকড় পচে গিয়ে গাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এমন জলাবদ্ধতা উপজেলার আচমিতা, বনগ্রাম, পৌর এলাকা, চান্দপুর, মুমুরদিয়া, জালালপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে। পরিত্রানের জন্য ইউএনও সকাল সন্ধ্যা ছুটে যাচ্ছেন কৃষকের পাশে।
কিন্তু পৌর এলাকার উপজেলা পরিষদ থেকে হাসপাতাল-থানা সড়কের মাঝখানে সড়ক ও পুকুরের পানি একাকার হয়ে সড়কে হাঁটু পানি জমে রয়েছে। ধসে গেছে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সামনের সড়ক। পূর্বপাড়া মহল্লার বসত বাড়িতে উঠে গেছে পানি। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই। যেন এগুলো দেখারও কেউ নেই। ফলে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, টানা বর্ষনের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার হাত থেকে ফসলী জমি রক্ষার জন্য গত দুই দিনে মসূয়া, আচমিতা ও বনগ্রাম ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে জরুরী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে সাময়িক পানি নিষ্কাশন হলেও পরিকল্পিত পদক্ষেপ ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। তাছাড়া এ ব্যাপারে জনগণকে আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানান।