চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাফিজ ইমতিয়াজের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সত্ত্বেও বেআইনিভাবে পৌরসভা কার্যালয় ও পৌর এলাকার সড়ক বাতির বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর সংবাদ সম্মেলন করেছে।
জানা যায়, সোমবার (৩ জুলাই) সকাল ১১ টায় পৌরসভার মিলনায়তনে পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র অত্র পৌরসভায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। পৌরবাসীর মৌলিক চাহিদার মধ্যে রাত্রিকালীন নিরাপদ চলাচলে সড়ক বাতির চাহিদা অন্যতম। বিগত ১৯৯৮ সালে পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি পৌরসভার কোন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, গত ২৬ জুন দুপুরে আমি দাপ্তরিক কাজে পৌরসভায় অবস্থানকালীন সময়ে কর্মচারী মারফত জানতে পারি যে, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল এর জন্য পৌরসভার সকল বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে লোক এসেছে। আমি তাৎক্ষণিক পিয়ন মারফত উনাদেরকে অবহিত করি যে, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। ২ জন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শতবার অনুরোধ করা স্বত্ত্বেও বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাফিজ ইমতিয়াজ কোন প্রকার উত্তর না দিয়ে বৈদ্যুতিক পিলারে উঠা কর্মচারীকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। তখন উপস্থিত কাউন্সিলর ও স্থানীয় লোকজন উনাকে পুনরায় অনুরোধ করেন যে, আপনি দয়া করে মেয়র সাহেবের সাথে দেখা করেন উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তখন মোহাম্মদ নাফিজ ইমতিয়াজ বলেন যে, মেয়র মুক্তিযোদ্ধা এইসববলে কোন লাভ হবে না মেয়রকে বলেন বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। তার এই উদ্বিত্তপূর্ণ আচরণে উপস্থিত লোকজন হতভম্ভ হয়ে পড়ে। কাউন্সিলরগনের অনেক অনুরোধের পর ওঁরা দুই জন আমার পৌরসভা দপ্তরে আসেন। আমি ওঁদের উদ্দেশ্যে বলি যে, আমি আপনাদের এত অনুরোধ করেছি, আপনারা আমার অনুরোধ টুকু রাখলেন না। আমরা পৌরসভার সকল বিল পরিশোধ করেছি। আপনি দয়া করে বিদ্যুৎ লাইনটি সংযোগ দিয়ে দিন। কিন্তু উনি সৃষ্টাচার বহির্ভূত ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ না দিয়ে আসন ছেড়ে চলে যেতে উদ্বুদ্ধ হন। এ সময় আমার দপ্তরে উপস্থিত এলাকার লোকজন ও কাউন্সিলররা উনাকে বিদ্যুৎ সংযোগ না দিয়ে যাইতে বাধা প্রদান করেন। তাৎক্ষনিক উনি ওঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন এবং আমাকে কথা বলার জন্য ফোনটি দেন, ফোনে যুক্ত ঐ কর্মকর্তা ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং সংযোগ পুনরায় লাগিয়ে দিবেন মর্মে আশস্ত করেন। এ সময় হঠাৎ সীতাকুণ্ড থানার একজন পুলিশ অফিসার খুরশিক আমার দপ্তরে উপস্থিত হন। সব বিষয়ে অবগত হয়ে তিনিও অভিমত প্রকাশ করেন যে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা উচিত হয়নি। তখন মোহাম্মদ নাফিজ ইমতিয়াজ ভুল হয়েছে মর্মে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং লাইনম্যানকে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেওয়ার জন্য মুঠোফোনে নির্দেশ প্রদান করেন। বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার পরও পরবর্তীতে নাফিজ ইমতিয়াজ সীতাকুণ্ড মডেল থানায় পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ ফজলে এলাহী পায়েলকে আসামি করে একটি অভিযোগ করেছেন বলে আমরা জানতে পারি এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাথেও এ সে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে পৌরসভার ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করার কু মানষে লিপ্ত রয়েছে। আমি বাড়বকু- বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাফিজ ইমতিয়াজের এহেন ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণের তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি বলতে চাই বিদ্যুৎ বিভাগের নানা অপকর্ম ও অনিয়মের কারণে সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের এসব ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে সরকারে তথা বিদ্যুৎ বিভাগের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করা এবং নাফিজ ইমতিয়াজ ও তার পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস নির্ণয় করে তিনি কাদের এজেন্টা বাস্তবায়নের জন্য এই দুষ্টু প্রকৃতির কর্মকাণ্ডে তৎপর তা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান করছি। পৌর মেয়র আরও বলেন, প্রয়োজনে এ অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে আমরা সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। জনাকীর্ণ এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, কাউন্সিলর বদিউল আলম জসিম, কাউন্সিলর সামছুল আলম আজাদ, প্যানেল মেয়র হারাধন বাবু চৌধুরী, কাউন্সিলর শফিউল আলম মুরাদ, কাউন্সিলর দিদারুল আলম এপোলো, কাউন্সিলর ফজলে এলাহি পায়েল, কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, কাউন্সিলর শাহ কামাল চৌধুরী, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগম, কাউন্সিলর কামরুন নাহার কাকলী, কাউন্সিলর খালেদা আক্তার সহ পৌরসভার সচিব এবং কর্মকর্তাবৃন্দ।