অধিকৃত পশ্চিম তীরে জেনিনের শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনী এবং শসস্ত্র ফিলিস্তিনিদের তুমুল গুলি বিনিময় হয়েছে। গত সোমবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ওই অঞ্চলে ড্রোন হামলার মধ্য দিয়ে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপকমাত্রায় অভিযান শুরু করেছে। হামলায় নিহত হয়েছে ৮ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছে আরও ৫০ জন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ খবর জানিয়েছেন। ইসরায়েল বলছে, তারা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। তবে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করেছে। ইসরায়েলের এক সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, এ অভিযান শেষের কোনো সময়সীমা নেই। তবে এ অভিযান কয়েক ঘণ্টাও চলতে পারে, একদিন চলতে পারে কিংবা দু’দিনও চলতে পারে। জেনিন নতুন প্রজন্মের সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গেরিলাদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। গতবছর জেনিনে বার বার ইসরায়েলি অভিযান চলেছে। আর স্থানীয় ফিলিস্তিনিরাও ইসরায়েলিদের নিশানা করে কয়েক বার গুলি চালিয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী জেনিন ব্রিগেডের যোদ্ধাদের কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত একটি বিগ্রেডে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েল তাদের অভিযানকে ‘সন্ত্রাসবাদ দমনের বড় ধরনের প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছে। ওদিকে, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলের এই অভিযানকে আগ্রাসন আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “বীরোচিত জেনিন শিবির এই আগ্রাসন এবং দখলদারিত্ব রুখে দাঁড়াচ্ছে।” জেনিন শিবিরের এক বাসিন্দা আহমেদ জাকি বিবিসি কে বলেছেন, কয়েকটি রাস্তা থেকে ইসরায়েলের সারি সারি সামরিক যান শরণার্থী শিবিরের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। এই শিবিরে সত্যিকারের যুদ্ধ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনের এক অ্যাম্বুলেন্স চালক। রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে তিনি বলেন, “শিবিরের ওপর আকাশ থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। প্রতিবারই আমরা পাঁচ থেকে সাতটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাই আর গাড়ি ভর্তি করে আহতদের নিয়ে ফিরে আসি।” ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আহতদের ১০ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনিনের অভিযান পরিকল্পনামতই এগুচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। ওদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইসরায়েল পশ্চিমতীরের বাদবাকি অংশে অভিযান সম্প্রসারণ করতে চায় না। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “জেনিনে মনোনিবেশ করা আর কেবল সন্ত্রাসী ও তাদের সেলগুলোর দিকে নজর রাখাই আমাদের লক্ষ্য।” ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এই অভিযানকে ফিলিস্তিনের প্রতিরক্ষাহীন জনগণের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধাপরাধ আখ্যা দিয়েছেন। ওদিকে, নাবিল আবু রুদেইনা বলেছেন, এই নির্মম আগ্রাসনের মুখে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূখণ্ডের সুরক্ষায় অবিচল থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না দখলদাররা পরাজিত হয় এবং মুক্তি অর্জন হয়।”