ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত আসামীর মালামাল জব্দের সময় একই বাড়ির লোক হিসেবে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে স্বাক্ষী হিসেবে পুলিশ তার নাম লিপিবদ্ধ করে। প্রায় সাড়ে তিন বছর পূর্বের ওই ডাকাতির মামলার আসামি হিসেবে ওয়ারেন্ট আসে স্বাক্ষী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। থানা পুলিশ ওই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে তাকে আটক করে। ওয়ারেন্ট অনুযায়ী তাকে আদালতে প্রেরণ করে। পরে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বিষয়টি দ্রুত যাচাই বাছাই করে আটককৃত ব্যক্তি আসামি নন বলে নিশ্চিত হয়ে তাকে মুক্তি দেন। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব বড়ালি গ্রামের।
জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই মামলার চার্জশীট ভুক্ত ৩নং আসামি আনোয়ার হোসেন পিতা: আবদুর রহমান বেপারী এবং প্রধান আসামি আঃ কাদির পিতাঃ সামছুল হকের বাড়ি পৌর এলাকার পূর্ব বড়ালি গ্রামে। অন্যদিকে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট আসা আনোয়ার হোসেন পিতা: ফজল হক গ্রামও পূর্ব বড়ালি। শুধুমাত্র নামের মিলের কারণে ডাকাতির মামলার পলাতক আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে ওয়ারেন্ট আসে স্বাক্ষী আনোয়ার হোসেনের নামে। মামলার চার্জশীট ও মালামাল উদ্ধারের নথিপত্রে উভয় আনোয়ার হোসেনের সকল তথ্য ষ্পষ্টভাবে উল্লেখ্য রয়েছে।
বুধবার(৫ জুলাই) দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে পৌর এলাকার পূর্ববড়ালি গ্রামের তার বাড়ির জনৈক ডাকাতি মামলার অভিযুক্ত আঃ কাদিরের বসত ঘর থেকে ডাকাতির মালামাল জব্দ করার সময় তাকে একই বাড়ির লোক হওয়ায় স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর নেয়। কিন্তু গত ৩ জুলাই ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে কৌশলে ফরিদগঞ্জ বাজারে ডেকে এনে ওয়ারেন্ট দেখিয়ে আটক করে।
আনোয়ার হোসেন এ সময় পুলিশকে জানান, তিনি ওই ডাকাতির মামলার মালামাল জব্দের সময়কার স্বাক্ষী। তারই নামে আরেক আনোয়ার হোসেন ওই মামলার অন্যতম আসামী। বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ মামলার কাগজপত্র যাচাই করে নিশ্চিত হন এই আনোয়ার সেই মূল অভিযুক্ত আনোয়ার নন। তারপরও পরদিন মঙ্গলবার ওয়ারেন্ট ভুক্ত হিসেবে আনোয়ার হোসেনকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
পরবর্তীতে চাঁদপুর আদালতের জেলা দায়রা জজ বিজ্ঞ বিচারক মোঃ মহসিনুল হক বিষয়টি যাচাই বাছাই করে তাকে তাৎক্ষনিক মুক্তির আদেশ দেন।
অন্যদিকে ডাকাতি মামলার বাদী মাওঃ মোস্তাক আহম্মেদ জানান, তার দায়েরকৃত মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন ওয়ারেন্ট আসা আনোয়ার হোসেন একই ব্যক্তি নন। তাই বিষয়টি জেনে আদালতে উপস্থিত থেকে আনোয়ার হোসেনকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছি।
এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আঃ মান্নান জানান, আদালত থেকে আসা ওয়ারেন্ট তামিল করতে আমরা আনোয়ার হোসেনকে আটক করি। পরবর্তীতে আমরা প্রকৃত ঘটনাটি জানতে পারি। তারপরও তিনি যেন ভবিষ্যতে হয়রানি না হন, সেই জন্য তাকে আদালতে প্রেরণ করি। পরে আদালত নথি যাচাই পূর্বক তাকে মুক্তি দেন।