পদ্মা সেতুতে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে চলন্ত গাড়ি থেকে টোল আদায় তথা ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম-(ইটিসিএস) পরীক্ষামূলক শুরু হয়েছে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন বা আরএফআইডি পদ্ধতিতে দুই পাড়ে একটি করে বুথে দিয়ে এই টোল আদায় প্রাথমিক ভাবে শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতির জন্য রেজিস্ট্রেশন করা গাড়ি টোল প্লাজার সামনে আসতেই রোবোটিক ক্যামেরা গাড়ি শনাক্ত করবে। নির্ধারিত টোল কাটা হলে ব্যারিয়ার অটোম্যাটিক উঠবে এবং স্ক্রিনে ব্যালেন্স দেখা যাবে। এই সুবিধা পেতে হলে প্রতিটি যানবাহনই আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া হাইব্রিড সিস্টেম টাচ অ্যান্ড গো পদ্ধতিও থাকবে। কার্ডে ব্যালেন্স থাকলে টাচে ক্যাশলেস টোল দেয়া যাবে। কেউ চাইলে ক্যাশেও টোল দিতে পারবেন। নতুন এ দুই পদ্ধতি চালু হলে টোল প্লাজা অতিক্রম করতে কোনো যানবাহনকেই আর অতিরিক্ত সময় অপচয় করতে হবে না। বুধবার সকালে মাওয়া প্রান্তের টোল প্লজায় এসে সেতু সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন টোল আদায়ে নতুন এ পদ্ধতি (ইটিসি) পরিদর্শন করে গেছেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী প্রতিবেদককে জানান, বর্তমানে কম্পিউটার কালেক্টর পদ্ধতিতে ম্যানুয়ালি টোল আদায় করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে এখন ১৫টি লেন দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া আধুনিক করার ক্ষেত্রে ১৭টি লেন চালু থাকবে। তবে এই পদ্ধতিতে টোল আদায় বর্তমানে পাইলটিং বা পরীক্ষা মূলক ভাবে চালু হয়েছে। আরও কিছু টেকনিক্যাল কাজ বাকি রয়েছে। এই কাজ গুলো সম্পন্ন হতে এবং এই পদ্ধতি পুরোপুরি চালু হতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। পরিকল্পনা রয়েছে-মাওয়া প্রান্তে ১ নম্বর বুথে আরএফআইডি, ২ নম্বর বুথে হাইব্রিড বা আরএফআইডি, টাচ অ্যান্ড গো এবং ক্যাশ তিন পদ্ধতিই থাকবে। আর ৩ থেকে ৭ নম্বর ৫টি বুথে থাকবে টাচ অ্যান্ড গো এবং ক্যাশ। বাকি ৮ নম্বর বুথে শুধু মোটরসাইকেলের জন্য কম্পিউটারে কালেক্টর ম্যানুয়ালি অর্থাৎ বর্তমান সিস্টেমে টোল আদায় করা হবে। একইভাবে জাজিরা প্রান্তে ও টোল আদায় করা হবে। তবে এই প্রান্তের ৯টি বুথ থাকবে। এখানে ৮ ও ৯ নম্বর বুথে কম্পিউটার কালেক্টর পদ্ধতিতে ম্যানুয়ালি নগদ টাকা আদায় করা হবে। এই টোল আদায়ের জন্য কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু উত্তর থানার কাছে কাউন্টার চালু করা হবে। বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান ‘একপে’ কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের কাজটি করার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, যানবাহনের সামনে ড্যাশবোর্ড থাকবে। আরএফআইডি নম্বরটি সংযুক্ত হবে ব্যাংক হিসাবে। এই আইডিতে অগ্রিম টাকাও রিচার্জ করা যাবে। বিশ্বের জনপ্রিয় এই দুই পদ্ধতিতে ঈদের পরেই পাইলটিং শুরু হচ্ছে। তবে এই পদ্ধতিতে টোল আদায় করা শুরু হয়ে গেলে কোন যানবাহনকে আর লাইনে অপেক্ষায় থাকতে হবে না।