আষাঢ়ের শুরুতে চলতি ভরা বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবির নদণ্ডনদী, খাল বিলে আশানুরূপ পানি জমেনি। নেই কোন স্রােতধারাও। ফলে বাজারে মাছ ধরার জন্য দেশীয় পদ্ধতিতে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ ও যন্ত্র ক্রয়- বিক্রয়ে তেমন সাড়া নেই। এ ছাড়া এসব মাছ ধরার যন্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত বাঁশ সুতাসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের মুল্য বেশি হওয়ার কারনেও ক্রেতারা কিনছে সীমিত পরিমাণে। এতে করে হতাশায় পড়েছে বাজারে নিয়ে আসা এসব যন্ত্রের বিক্রেতারা। পাঁচবিবি বাজার ঘুরে কয়েকজন বিক্রেতা ও ক্রেতার সাথে কথা বললে এমন তথ্য জানান তারা।
উপজেলার দমদমা গ্রামের খলসা ব্যবসায়ী সীতা রাম। তিনি দীর্ঘ ১৫বছর ধরে পাঁচবিবি বাজারে এই ব্যবসা করে আসছেন। তিনি বলেন, আগে বর্ষার শুরুতে আকাশের পানিতে নদণ্ডনদী, খাল বিলে পানি থৈ থৈ করত। আর স্রােতের বিপরীতে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন প্রকার মাছ দেখা যেত। বাজারে দেশিয় তৈরী এসব যন্ত্র কেনার ধুম পড়ে যায়। হাট বার মঙ্গলবার ও শুক্রবার দিন ছাড়াও তাড়া বাড়ী থেকে গিয়ে কিনে নিয়ে আসত। এখন আর সেই দিন নেই। তিনি আরো বলেন, আগে উপজেলার মহলীপাড়া গুলোতে স্থানীয় ভাবে এসব ফাঁদ ও যন্ত্র তৈরি হলেও বাঁশ, সুতাসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়াই এগুলো আর তৈরী হয় না। এখন নীলফামারী ডোমার থেকে পাইকারী দরে কিনে এনে বিক্রি করে। লাভ সীমিত হলেও দীর্ঘ দিনের পেশা ছাড়তে পারেননি। উপজেলার বিরনগর গ্রামের অপর ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই ব্যবসা করেন, এবার আবহাওয়া ও মুল্যের কারণে বিক্রি কম। উপজেলার আটুল গ্রামের অপর ব্যবসায়ী বলেন, নীলফামারী থেকে কিনে এনে সে বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে। পুরা বর্ষা হলে বেচা কেনা বেশি হবে বলে আশায় আছে। উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে মাছ ধরার খলসা কিনতে আসা হাফিজুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছর এসব ফাঁদ ও যন্ত্র একটার দামে ২/৩টা কেনা যেত। বর্তমানে এগুলোর এতই দাম কেনাই যায়না। তারপরও মাঠে পানি ও স্রােত না থাকায় মুল্য বেশির কারণে আপাতত একটা কিনেছে। বিক্রেতারা জানান, মাছ ধরার এসব দেশি যন্ত্রের এলাকা ভেদে বিভিন্ন নাম রয়েছে এবং খুচরা বিকিও আলাদা আলাদা। বর্তমানে বাজারে প্রতিটি ভরং- ৩৫০টাকা, খলসা- ৪০০টাকা, টেপা- ২৫০টাকা, পলই-১৫০টাকা, বৃত্তি- ১৭০টাকা, ক্যাসেট- ৮০টাকা, দিরু-২২০টাকা ও খলনী ১৫০টাকা দরে বিক্রি করছেন। তবে বাজারে এসব মাছ ধরার যন্ত্রে চাহিদা কম হলেও আকাশের পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলেই এগুলো চাহিদা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন তারা।