রায়গঞ্জে মৌসুমের চেয়েও ধানের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এখন প্রকার ভেদে প্রতিমণ ধানের দাম ২৫০-৩০০ টাকা কমে গেছে। অনেক কৃষককে হাটে ধান বিক্রি করতে এসে ধান বিক্রি না করে ফেরত নিয়ে যেতে দেখাগেছে। শনিবার উপজেলার চান্দাইকোনা হাট থেকে ধান ফেরত নিয়ে যাচ্ছিলেন ধামাইনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক নাজমুল হুদা। তিনি বলেন, মৌসুম সময়ে কাঁচাভেজা ব্রিধান-৯০ ও কাঁটারিভোগ ধান বিক্রি করেছি ১৪০০-১৫০০ টাকা মণ। এখন শুকনা একই ধানের দাম বলছে ১২০০-১২৮০ টাকা মণ। তাই বিক্রি না করে ফেরত নিয়ে যাচ্ছি। এবার সবকিছুর দাম বেশি। আবাদে গত বছরের চেয়ে বিঘাপ্রতি দুই-তিন হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। তাই এদামে ধান বিক্রি করে আবাদের খরচ উঠবেনা বলে তিনি জানান। উপজেলার চান্দাইকোনার মেসার্স অন্তিম সেমি অটো রাইস মিলের মালিক গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি এখন কাঁটারিভোগ ধান কিনছেন ১২০০-১৩০০ টাকা মণ। ব্রিধান- ২৯ কিনছেন ১১০০টাকা ও মোটা হাইব্রিড ১০৫০ টাকা দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন ধানের প্রচুর আমদানি, কিন্তু গ্রাহক কম। তারা বলেন, মৌসুমে বড় কৃষকেরা ধান বিক্রি করে নাই। পরে দাম বেশি হবে আশায় ধান মজুত করেছিলেন। এখন তারা ব্যাপকহারে বাজারে ধান আনছেন। অপরদিকে মিল মালিকরা ধান কিনছেন না। এ কারণেই দাম কমেছে বলে দাবি করেন আড়তদার ও পাইকাররা। আপরদিকে একই এলাকার মেসার্স রোহান অটো রাইস মিলের মালিক আবদুস সামাদ আকন্দ জানান, এলসিতে বিপুল পরিমাণ চাউল আমদানি করা হয়েছে। বাজারে অপেক্ষকৃত কম দামে এলসির চাউল খাচ্ছেন ভোক্তারা। ফলে স্থানীয় মিলের চাল বাজারে চলছে না। একারণে মিল মালিকেরা ধান কিনছেন না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছরে দুভিক্ষ দেখা দিতে পারে এমনটি চাউর হওয়ায় মিলাররা চড়া দামে এবার বোরো মৌসুমে সাধ্যমত ধান চাল মজুত করেছেন। সে কারণে মৌসুমে ধানের দাম বেশি হয়। এখন এলসির প্রভাবে বাজারে আর আমাদের চাল লোকসান দিয়েও বিক্রি করা যাচ্ছে না তাই আমরা আগের মত ধান কিনতে পারছিনা। তাই ধানের দামে ভাঁটা পড়েছে বলে তিনি জানান।