ইসরায়েলের নজরদারি প্রযুক্তি এনে সরকার দেশে বিরোধীদলের নেতাদের মোবাইল ফোন হ্যাক করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, পকেটের ফোনটাই এখন বড় শত্রু। ফোনে কথাবার্তা সবকিছুই এখন নজরদারিতে। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির একাংশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ইসরায়েলি প্রযুক্তি পেগাসাস ব্যবহার করে দেশে বিরোধীদলের নেতাদের ফোন হ্যাক করা হচ্ছে। বিরোধীদলকে দমনের জন্য এবং বিরোধী মত নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে তারা (সরকার) এটা করছে। এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। বিরোধী দল ছাড়া আওয়ামী লীগ আবারও নির্বাচনের পথে হাঁটছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, সেই আশা পূরণ হবে না। তিনি বলেন, এবার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচনে গেলে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এদের সঙ্গে সমঝোতা করে কোনো লাভ হবে না। আবারও তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করবে। মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও জনগণকে প্রতারিত করে ক্ষমতা দখল করতে চায় আওয়ামী লীগ। এবার প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছে সরকার। দেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ব দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে দেশের জনগণ ভোটের অধিকার পেলে তাদের রাজনৈতিক পরাজয় হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচনে গেলে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না। ভোটের মাঠ থেকে বিরোধী দলগুলোকে সরিয়ে দিতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে পুরোনো চক্রান্তে লিপ্ত সরকার। স্বরাষ্ট্র, আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা নিষ্পত্তির চাপ দিচ্ছে। আবারও বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে হাঁটছে সরকার। তিনি বলেন,আমেরিকা স্যাংশনস দিয়েছে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দেশের মানুষকে বিপদে ফেলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দেশের ভাবমূর্তি চরম তলানীতে ঠেকেছে। ঋণগ্রস্ত করেছে, ফতুর করে ফেলেছে দেশের মানুষকে। মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা ঐক্যবদ্ধ। সাংবিধানিকভাবে এই সরকার অবৈধ। তাদের পদত্যাগ করতেই হবে। আওয়ামী লীগ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের লক্ষ্যই দেশের মানুষকে শোষণ করা। আমরা শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সড়কে নৈরাজ্য চলছে, অনেকে প্রাণ হারাচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বডি ক্যামেস্ট্রিতে গণতন্ত্র নেই, আছে শুধু সন্ত্রাস আর চুরি। মানুষ আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতা দেখতে চায় না। রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী ও আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।