বগুড়ার গাবতলীতে দাদন ব্যবসায়ী কর্তৃক স্ত্রীকে বেঁধে আটক রেখে টাকা আদায় করায়, অপমান সইতে না পেরে, লজ্জায় ক্ষোভে দুঃখে দিনমজুর স্বামী আবদুল মালেক (৪০) গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামদায়ের করা হয়েছে, পুলিশ দাদন ব্যবসায়ী গোলজার রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মগ্যে প্রেরন করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পাররানীরপাড়া গ্রামে। নিহত আবদুল মালেক ওই গ্রামের পিতামৃত হবিবর রহমানের ছেলে।
জানাগেছে, নিহত আবদুল মালেকের স্ত্রী রিমা বেগম গত ৪ মাস আগে একই গ্রামের পিতামৃত আকামুদ্দিনের ছেলে দাদন ব্যবসাীয় গোলজার রহমানের কাছ থেকে দেড়ভরি স্বর্ণ, চেকের দুটি ফাঁকা পাতা ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি বন্ধক রেখে ৩৬ হাজার টাকা নেয়। এই টাকা সুদে আসলে লক্ষাধিক টাকায় রুপান্তর হয়। টাকা পরিশোধ করতে দাদন ব্যবসায়ী গোলজারসহ তার সঙ্গীরা রিমা বেগমকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিল।
টাকা জোগার করতে রিমা বেগম শনিবার, গাবতলী সদর ইউনিয়নের উঞ্চুরখী গ্রামে পিতার বাড়ী যাওয়ার পথে, দাদন ব্যাসায়ীরা তাকে একা পেয়ে ধাওয়া করলে সে পালিয়ে একটি বাড়িতে দিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে দাদন ব্যবসায়ীরা রিমাকে ধরে এনে রাত ২টা পর্যন্ত একটি অন্ধকার বাঁশঝাড়ে বেঁধে রাখে। দাদন ব্যাসায়ীরা রিমার স্বামী আবদুল মালেকের বাড়িতে গিয়ে তাকে হুমকি দিয়ে বলে, টাকা না পেলে, তার স্ত্রীকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করিয়ে টাকা আদায় করবে।
সংবাদ পেয়ে রাতে রিমার বাবা ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তার মেয়েকে ছেড়ে নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে আসে। এদিকে স্ত্রীকে আটক রেখে টাকা আদায় করায়, অপমান সইতে না পেরে লজ্জায়, ক্ষোভে দুঃখে রিমার দিনমজুর স্বামী আবদুল মালেক শনিবার রাতে তার শয়ন ঘরে তীরের সাথে রশিদিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
সকালের মালেকের আত্মহত্যার সংবাদ গ্রামে ছড়িয়ে পরলে ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসী দাদন ব্যবসায়ী গোলজার রহমানসহ তার সহযোগীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করেছে। গোলজার রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
এব্যপারে গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আবদুল মালেকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। থানায় রিমা বেগম বাদী হয়ে দাদন ব্যবসায়ী গোলজার রহমান সহ অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গোলজার রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।