অবশেষে বন্ধ হয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কৃষি-বানিজ্য মেলার নামে শুরু হওয়া নিষিদ্ধ লটারি-জুয়ার মেলা। সোমবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সরাসরি লটারির মাঠে গিয়ে বন্ধ ঘোষনা করেন এবং জনগনকে লটারিতে অংশগ্রহণ না করার আহবান জানান। প্রশাসনের এমন পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা সহ সর্বস্তরের মানুষ।
জানা গেছে, ঝিনাইদহের শৈলকুপার মোহাম্মদপুর গ্রামের ফুটবল মাঠে অর্গানিক কৃষিপন্য ও বানিজ্য মেলা শুরুর প্রচার-প্রচারনা চালানো হয়। সেই সাথে গ্রামাঞ্চলে ব্যাপকভাবে প্রচার চালায় লটারির আর মোটরসাইকেল, টিভি সহ বাহারী সব পুরষ্কারের ঘোষনা আসতে থাকে। সেই সাথে নানা ধরেনের জুয়ার বোর্ডও চালাতে থাকে কয়েকটি স্থানে। গত ৪তারিখ থেকে শুরু হয় কৃষি মেলার নামে এমন লটারি জুয়ার। তাছাড়া সার্কাসের নামে অশ্লীল নৃত্য, চলচিত্র থেকে বিতর্কিত, ছিটকে পড়া বিভিন্ন অভিনয় শিল্পীও এনে নাচ-গানের আসর বসানো হয়।
শৈলকুপা উপজেলায় ২শ৮৯ টি গ্রামের ৩লাখ ৬১ হাজার মানুষের অলিতে-গলিতে, রাস্তাঘাটে, ঘরে ঘরে চালানো লটারির নামে এমন জুয়ার প্রচারনা।
করোনা মহামারি আর অর্থনৈতিক এমন দৈন্য-দশার মাঝে হানা দেয় লটারী-জুয়া। ১০ থেকে ২০ টাকার লটারি কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, শ্রমজীবি-খেঁটে খাওয়া মানুষ। ১৪০ টি মাইকিং ও ১৪০টি ড্রামে ভর্তি লটারিতে চলে দিনরাত কেনা-বেঁচা। প্রতিদিন গ্রামাঞ্চলের মানুষের পকেট শূণ্য হতে থাকে, বড় ধরনের ধাক্কার শংকা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। এক সপ্তহের ব্যবধানে শৈলকুপার চড়িয়ার বিল মোহাম্মদপুর মাঠ থেকে জুয়াড়ীরা হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকার উপরে।
খোদ লটারির টিকিটে অর্গানিক কৃষি পণ্য ও বানিজ্য মেলা লেখা রয়েছে। আবার কিছু লটারিতে সাতক্ষীরা শিল্প-বানিজ্য মেলা লেখা রয়েছে। এব্যপারে উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের জাহেদ আলী নামের এক ব্যক্তি জানান দেশে অর্থনেতিক অবস্থা খুব খারাপ অথচ এরা লটারির নামে জুয়া খেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে শৈলকূপা থেকে এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি বলে মনে করি। বানিজ্য মেলার মালিক জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায় নি। এ ব্যাপারে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে মেলার অনুমতি নিয়েছে। কিন্তু মেলায় অবৈধভাবে লটারির নামে জুয়া খেলে এলাকার মানুষের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় আমরা জুয়ার নামে লটারি খেলা বন্ধ করে দিয়েছি।