রংপুরের পীরগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুরাতন একটি ঈদগাহ মাঠ দখল নিয়ে ঘর নির্মাণের অপচেষ্টা করছে একটি মহল। এ নিয়ে বিবদমান দু’পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহর্তে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চতরা ইউনিয়নের ঘাষিপুর গ্রামে। স্থানীরা বলছেন, কুয়াতপুর হামিদুর গ্রামের মৃত নিপুছা শেখের ছেলে আবদুর রহমান ঘাষিপুর মৌজায় তফসিল বর্ণিত সম্পত্তির ১১৫ দাগে ৩ একর ১৩ শতাংশ জমির মধ্যে ২৬ শতাংশ জমি ঘাষিপুর ঈদগাহ মাঠের নামে দক্ষিণ-পশ্চিমে দিক উল্লেখ করে ওয়াক্ফ দলিল করে দেন। যাহার দলিল নং ১৯৬০ তারিখ ৩০/১১/১৯৬০ ইং। কুয়াতপুর হামিদপুর গ্রামের মৃত নিপুছা শেখের এক কন্যার নিকট হইতে ঘাষিপুর গ্রামের নফের উদ্দিন ৪৩ শতাংশ জমি খরিদ করেন। নফের উদ্দিন ও তার মেয়ে জামাই ছলি মুদ্দিনের বাড়ির সাথে ঈদগাহ মাঠ, অই মাঠে ঈদের নামাজ আদায় ও পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন গ্রামবাসী। ওই পশু কোরবানির ময়লার গন্ধ কে কেন্দ্র করে তারা জোরপূর্বক ঈদগাহ মাঠে কোরবানি ও নামাজ বন্ধ করে দেন। ঘটনার পর থেকে ৪০ বছর যাবত অই ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ আদায় না হলেও ঈদগাহ মাঠ হিসাবে ফাঁকা জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। মৃত নফের উদ্দিনের নাতি ইব্রাহিম, আবদুল কাদের, মফেজ্জাল হোসেন, আবদুল লতিব,আব্দুল হামিদ এবং আবদুর রাজ্জাকের ছেলে মুকুল মিয়া নানার সম্পদ দাবি করে ২০২২ সালে আদালতে ল্যান্ড সার্ভের মামলা দিয়ে, বলপ্রয়োগ করে ওই ঈদগাহ মাঠটি বাঁশের বেড়া দিয়ে দখলে নেয়। এ বিষয়ে গ্রামবাসীর পীরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি আবদুল আউয়াল সরেজমিনে তদন্ত করে গিয়ে বাঁশের বেড়া সরিয়ে ফেলেন। কিছুদিন দিন পরে আবারও টিনের বেড়ে দেয় ইব্রাহিম গংরা। গ্রামবাসী এ বিষয়ে আবারও থানায় অভিযোগ দিলে থানা পুলিশ বিবাদীগন কে ঈদগাহ মাঠে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের জন্য নিষেধ করেন।
ঈদগাহ মাঠের সভাপতি ইজ্জত আলী রংপুর আদালতে এমআর মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং ৩১২/২৩ ধারা-ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৪/১৪৫ ধারার আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। বিবাদীগন কে থানা পুলিশ আদালতের নোটি প্রেরণ করা সত্ত্বেও জোরপূর্বক অই মাঠে ইটের ঘর নির্মানের অপচেষ্টা করেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। ঈদগাহ মাঠের সভাপতি ইজ্জত আলী, আলহাজ¦ ইফাজ উদ্দিন, আবদুর ওহাব আলী, রজ্জব আলী, হবিবর রহমান মন্ডল, সাত্তার মন্ডল, আবদুর রশিদ চৌকিদার সাথে কথা হলে তার বলেন, ঈদগাহ মাঠে নামে জমি দলিল হওয়ার ১০ বছর আগ থেকে অই মাঠে নামাজ আদায় করতেন গ্রামবাসী। এছাড়াও জমির মূল মালিক নিপুছা শেখের পরিবারের লোকজন ওই মাঠে নামাজ আদায় করতেন। নিপুছা শেখের মৃত্যুর পর তার ছেলে আবদুর রহমান ১৯৬০ সালে ঈদগাহ মাঠের নামে ওই জমিটি দলিল করে দেন। বর্তমানে দলিল ও মাঠ রেকর্ড ও ওই ঈদগাহ মাঠে নামে রয়েছে। তারা ওই দলিল অস্বীকার করে সেখানে বলপুর্বক ঘর নির্মানের অপচেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে ইব্রাহিম মিয়ার সাথে কথা হলে তারা বলছেন, এখানে কোনো ঈদগাহ মাঠ ছিলো না। এটি আমাদের নানার জমি এবং আমাদের দখলে রয়েছে। যে কারণে আমরা ঘর নির্মাণ করছি। বিষয়টি নিয়ে চতর বিট পুলিশ অফিসার এসআই ফিরোজ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আদালতে আইন অমান্য করেছে বিবাদীগন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।