মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া এলাকায় গড়ে উঠা একটি স্টিল মিলের নির্গত কালো ধোঁয়া থেকে মুক্তি চায় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এছাড়াও মিলটির আশপাশের এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে দূষিত হয়ে পড়ায় হুমকিতে রয়েছে জীববৈচিত্র্য।
স্থানীয় এলাকাবাসী পরিবেশ বিপর্যয় রোধে মিল কর্তৃপক্ষসহ উপজেলা প্রসাশনের বিভিন্ন দপ্তর বরাবর অভিযোগ করলেও স্টিল মিল কর্তৃপক্ষ ধোঁয়া পরিশোধন ও চারপাশে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বাউশিয়া এলাকায় গড়ে উঠা আকিজ ইস্পাত থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। মিলটির আশপাশ দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা নাক মুখে কাপড় দিয়ে চলাচল করছেন। অপরদিকে স্টিল মিলের বিপরীত পাশে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এ- কলেজের শ্রেণী কক্ষগুলো ধোঁয়ায় কষ্ট করে পাঠদান করছে শিক্ষার্থীরা। ভবেরচর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি হুমকিতে রয়েছে জীববৈচিত্র্য।
স্থানীয়রা জানান, আকিজ ইস্পাত স্টিল মিলের আশপাশে ভবেরচর ও বাউশিয়া ইউনিয়নের প্রায় পাঁচটি গ্রামের নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। মিলের লোহা পোড়ানোর বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় দিনের পর দিন ধোঁয়া বের হলেও শোধনের নেই কোন উদ্যোগ। এ নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নদী নালা ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির গজারিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাসুম সরকার বলেন, স্টিল মিলের কাঁলো ধোঁয়ার কারণে গজারিয়ার এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন প্রতিষ্ঠানটি একাধিকবার পরিদর্শন করে গেলেও নতারাও দূষণ বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। আমি মুন্সীগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরকে বিষয়টি অনুরোধ করছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। এ বিষয়ে আকিজ ইস্পাত স্টিল মিল কর্তৃপক্ষ কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুবাশ্বির বিনতে আলম জানান, কারখানার ধোঁয়া কালো হোক বা সাদা, তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আর যত কালো হবে, ক্ষতিকর পদার্থের পরিমাণ তত বাড়বে। স্টিল মিলের ধোঁয়া স্বাস্থ্যের জন্য আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য তা অনেক বেশি ক্ষতিকারক। তাছাড়া কালো ধোঁয়ার কারণে যে কোনো বয়সের মানুষের শ্বাসকষ্ট ও ক্যান্সার হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ না নিলে উপজেলা প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।