খুলনার পাইকগাছা সরকারি কলেজের ইংরেজি প্রভাষক মাসুদুর রহমান ওরফে মন্টুর পর্ন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। চতুর্থ স্ত্রীর সাথে পর্ন ভিডিও ফাঁস। মিডিয়াকর্মীদের হাতে প্রভাষক মন্টুর চার বিয়ের তথ্য এলেও এলাকাবাসীর ভাষ্য তার বিয়ে অসংখ্য। তাদের ভাষ্য বিয়ে করা তার নেশা ও পেশা। ইতোমধ্যে দুই স্ত্রীর আদালতে মামলা করেছেন। চতুর্থ স্ত্রী আকলিমা আক্তার আখি খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দাকোপ আদালতে যৌতুক মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১২৮/২৩। বিজ্ঞ আদালত আসামি মন্টুর বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা আক্তার খুলনা সদর পারিবারিক আদালতে মামলা করেছেন। মামলা নং-৫৪/২০। প্রভাষক মন্টু ৪র্থ স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা খুলনা সদর বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে তাদের বিবাহের কাবিন মিথ্যা, তঞ্চকী, যোগসাজসী, ভিত্তিহীন, ভুয়া, জাল অকার্য্যকরী উল্লেখ করে মামলা করেছেন। মামলা নং-৯৬/২৩। ৪র্থ স্ত্রীর বিরুদ্ধে খুলনা থানা, অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিমের আমলী অদালতে আরো একটি মামলা করেছেন। মামলা নং-সিআর ৯৫৯/২৩। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশণ (পিবিআই)কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রভাষক মন্টুর বিরুদ্ধে একাধিক স্ত্রীর মামলা এবং নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি টক অব দা টাউনে পরিণত হয়েছে। পাইকগাছা সরকারি কলেজের ইংরেজি প্রভাষক মাসুদুর রহমান ওরফে মন্টুর বৈধ ও অবৈধ বহু বিবাহের ঘটনা স্থানীয় মানুষের মুখে-মুখে। ইতঃপূর্বে তার ২য় স্ত্রী এনজিও কর্মী নাজমাকে বিয়ে করার কারণে ১ম স্ত্রী রেবা আক্তার কুসুম তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। কিছুদিন পর ২য় স্ত্রী এনজিও কর্মী নাজমাকে তাড়িয়ে দিয়ে কুসুমকে বিভিন্ন প্রলোভনে আবার বাড়িতে তোলেন। বিতাড়িত ২য় স্ত্রী এনজিও কর্মী নাজমা তখন কোন উপায়ন্ত না পেয়ে মন্টুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এভাবেই চলতে থাকে কিছু দিন। এর ফাঁকে তিনি তার কলেজ ছাত্রীদের পটিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে দেহ ভোগের চেষ্টা করেন। যা নিয়ে কলেজ ছাত্র-ছাত্রী ও অবিভাবকদের মধ্যে তুমুল হট্টগোল সৃষ্টি হয়। তৎকালিন স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেন প্রভাষক মন্টু, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন হলেও তিনি তার স্বভাবকে নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেননি। এরপর তিনি লুকিয়ে লুকিয়ে একই কলেজের সহকর্মী সুলতানা রহমান পান্নার প্রেমে হাবু ডুবু খেতে থাকেন। বিষয়টি জানা জানি হলে মন্টুর সংসারে জ¦লে ওঠে দাবানল। একপর্যায়ে মন্টু বিয়ে করে পান্নাকে নিয়ে বাড়ি তুললে ১ম স্ত্রী কুসুম মন্টুর সাথে তুমুল ঝগড়া করে চলে যান পিত্রালয়। পরবর্তীতে আপোশ রফা করে মন্টু তার ১ম স্ত্রী কুসুম ও ৩য় স্ত্রী পান্নাকে নিয়ে বসবাস করতে থাকে নিজ বাড়িতে। এভাবে চলতে চলতে ফাঁদে ফেলে তিনি বাগেরহাট জেলার আকলিমা আক্তার আখিকে প্রেমের ফাঁদে আটকিয়ে ফেলেন। বিধবা আখিও ভবিষ্যৎ সুখ স্বপ্নে বিভোর হয়ে গভীর প্রেমে মত্ত হন মন্টুর প্রেমে। মন্টু কাবিনে বর্তমানে কোন স্ত্রী নেই বলে উল্লেখ্য করেন। একপর্যায়ে কলেমা পড়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এই প্রেমিক জুটি। ঐ সময় সুকৌঁশলে আখির কাছ থেকে মন্টু হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। অভিযোগ রয়েছে মন্টু নাজমা, পান্না ও আখির কাছ থেকে বহু অর্থ হাতিয়ে নিয়ে নির্মাণ করেছেন তিন তলা বিলাশ বহুল বাড়ি ও কিনেছন মোটর গাড়ি। তিন স্ত্রী থাকার পর প্রভাষক মাসুদুর রহমান ১০ লক্ষ টাকা দেন মোহরের কাবিনে বিবাহ করেন আখিকে। বিয়ের পর ৪র্থ স্ত্রী আখিকে নিয়ে হানিমুন করেছেন কক্সবাজার ও কুয়াকাটা। চতুর্থ স্ত্রী আখি জানান, ঐ সময় মন্টু তার দেহ ভোগে ক্ষ্যান্ত হননি তুলেছেন তাদের যুগোল নগ্ন ছবি ও নগ্ন ভিডিও চিত্র ধারন করেছেন। অতঃপর মন্টুর বিলাশ বহুল বাড়ির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার জন্য যৌতুক দাবি করেন আখির কাছে। আখি যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় মন্টু আখির নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফাঁস করে তালাক দেয় তাকে। তালাক দিয়ে মন্টু মামলা করে আখির বিরুদ্ধে। তখন আখি ও মামলা করে মন্টুর বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে নগ্ন ছবি ও পর্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন জনের অভিমত শিক্ষক নামের কলঙ্ক মন্টুর চাকুরি চ্যুতি করা হোক। কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও অবিভাবক মন্টুর বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মো. মাসুদুর রহমান ওরফে মন্টু বলেন, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। সব কিছু সত্যি নয় আর আদালতে মামলা চলছে সেখানেই প্রমাণ হবে। পাইকগাছা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিহির বরন মন্ডল জানান, বিষয়টি আমি লোক পরস্পর জেনেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, বিষয়টি আমি জানা মাত্রই কলেজের অধ্যক্ষকে গভার্নিং বডির মিটিং ডেকে তাকে শোকজ করতে বলি। তাকে শোকজ করা হয়েছে এবং সে জবাব ও দিয়েছে। জবাবটি পর্যালোচনা করে রেজুলেশন করে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা বোর্ড (মাউশি)কে পাঠানোর জন্য বলেছি।