নওগাঁর মহাদেবপুরে একটি জাতীয় সাংবাদিক সংগঠনের নামে বরাদ্দ করা সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ মহাদেবপুর উপজেলা শাখার বিলুপ্ত কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য সাংবাদিক কাজী সাঈদ টিটো ও কাজী সামছুজ্জোহা মিলন স্বাক্ষরিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, গতবছর বিএমএসএফের নামে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। সংগঠনের সভাপতি বরুন মজুমদার সে অর্থ উত্তোলন করে কোন কাজ না করে আত্মসাৎ করেন। ইতোমধ্যে এই সংগঠন কেন্দ্রীয়ভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং সরকারি প্রকল্পের অব্যয়িত অর্থ ফেরৎ দেয়ার দাবি জানান তারা।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয় যে, সভাপতি পরিচয়ে বরুন মজুমদার স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী হাজী মোয়াজ্জেম হোসেনের নিকট থেকে অবৈধ চাঁদা হিসেবে ওই সংগঠনের নামে এক লক্ষ ২৩ হাজার টাকার চেয়ার, টেবিল, ফ্যান ও এলইডি টিভি গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেন। সেগুলোও উদ্ধারের আবেদন জানানো হয়।
অভিযোগকারি সাংবাদিক কাজী সাঈদ টিটো ও কাজী সামছুজ্জোহা মিলন জানান, তাদের অনুপস্থিতিতে বরুন মজুমদার সভাপতি হিসেবে ওই সংগঠনের ১৩ জন সদস্য কোন দিন খারাপ নিউজ লিখবেনা এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাজী মোয়াজ্জেম হোসেনের নিকট থেকে চাঁদা গ্রহণ করে। এটা অনৈতিক ও সাংবাদিকতার নীতি পরিপন্থি।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুলতান হোসেন জানান, ২০২২-‘২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম মহাদেবপুর উপজেলা শাখার নামে টেস্ট রিলিফ-টিআর প্রকল্পে এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ওই সংগঠনের সভাপতি বরুন মজুমদার গতবছর ২২ নভেম্বর সে টাকা নগদ গ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সংগঠনের নামে সোনালী ব্যাংকে সভাপতির একক স্বাক্ষরে পরিচালিত একটি হিসাব খোলা হয়। গতবছর ২২ নভেম্বর বরুন মজুমদার প্রকল্পের এক লক্ষ টাকা নগদ গ্রহণ করলেও ওই ব্যাংক হিসাবে জমা দেন ৯০ হাজার টাকা। এর চার দিন পর ২৬ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই সংগঠনের জাতীয় কমিটির সাধারণ সভায় সভাপতি কেন্দ্র ও সারাদেশের শাখা কমিটিসমূহ একযোগে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। সারাদেশের সদস্যদের সাথে মহাদেবপুর শাখার সভাপতি বরুন মজুমদার, কার্যনির্বাহী সদস্য কাজী সাঈদ টিটো, গোলাম রসুল বাবু, নওগাঁ জেলা কমিটির সহ সম্পাদক খোরশেদ আলম প্রমুখও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। এখান থেকে ফিরে ২৯ নভেম্বর বরুন মজুমদার ব্যাংকে জমা রাখা টাকা থেকে ৮৯ হাজার ৯০০ টাকা অবৈধভাবে তুলে নেন।
হাজী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, সংগঠনের সকলের নাম করে তার কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে। সংগঠন না থাকলে তিনি সেগুলো ফেরৎ চান।
ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জানান, একক নামে পরিচালিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বরুন টাকা উত্তোলন করেছে। এ টাকা দিয়ে সংগঠনের কোন কাজ করেনি। এর দায় সম্পাদকের নয়। একই কথা জানান, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান খোকন। বিষয়টি জানতে মোবাইলফোনে বার বার কল দিলেও বরুন মজুমদার রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসান জানান, সংগঠন বিলুপ্ত হলে অব্যায়িত টাকা ফেরৎ দিতে হবে। এ ছাড়া বিলুপ্ত সংগঠনের অর্জিত সম্পদ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।