পরিবেশ আইন না মেনে রাতের আঁধারে চলছে পাহাড় কাটা। বাড়ি নির্মাণ, রাস্তা সংস্কার এবং ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য পাহাড় কাটছে একটি চক্র। দেশের পাহাড়গুলো এখন খুব খারাপ সময় পার করছে। বিশাল বিশাল পাহাড় সাবাড় হয়ে যাচ্ছে রাতের আঁধারে। কারা সেই কাজ করছেন, তা-ও অজানা নয়। কিন্তু তার পরেও সেসব দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে এবং পাহাড়ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন বনজ, ফলদ ও ভেষজ গাছ ধ্বংস হচ্ছে। বাংলার জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়েছে। তার পরেও একের পর এক পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে, আইন ও প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করেই। প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিতে প্রতি রাতে চলে পাহাড় কাটা। সারা রাত ধরে চলে মাটি পরিবহন। তাই জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে এবং তাঁদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকেও বুঝতে হবে, জরিমানা করে ও খননযন্ত্র, ট্রাক জব্দ করে পাহাড় কাটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। কেননা পাহাড়ের ইতোমধ্যে অনেক ক্ষতি হয়েছে, বাকি অংশ রক্ষা করতে না পারলে পাহাড়গুলোও হুমকির মুখে পড়বে। যদিও আমাদের প্রদান মন্ত্রী মাননীয় শেখ হাসিনা এরইমধ্যে পাহাড় ও টিলাকাটা বন্ধে জেল জরিমানাসহ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সরকারের টিলা কাটা আর বন-উজাড়ের আইন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। আমাদের দেশে পাহাড়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। পাহাড়ের অবস্থান না থাকলে ভূমিকম্পের প্রকোপ বাড়বে জীবন ও সম্পদ বিনষ্ট হবে। ফলে প্রকৃতি বা পাহাড়কে প্রাকৃতিক ভাবেই থাকতে দিতে হবে। তাই নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মকাণ্ড জোরদার করার ক্ষেত্রে কি ধরনের সমস্যা এবং কারা এসবের পেছনে সক্রিয় রয়েছে- এ বিষয়গলো ভালোভাবে খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে অবাধে পাহাড় ও বন কাটা বন্ধ করে দেশীয় প্রজাতি ফল-মূলসহ নানা বনজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করতে হবে। তাহলেই বনায়নের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া জীববৈচিত্র্যকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।