১৭ জুলাই সোমবার যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ৮নং হরিহরনগর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জনসহ মোট ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন তিন পদের বিপরীতে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বাচন সুষ্টুভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানাগেছে, চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাষ্টার মোঃ জহুরুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাষ্টার ফরিদ উদ্দীন, স¦তন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক ও তরিকুল ইসলাম তুহিন। তবে, নির্বাচনের সময় যত নিকটবর্তী হচ্ছে ততই প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। বিজয় ছিনিয়ে আনতে যে যার মতো চেষ্টা অব্যহত রেখেছেন। চেয়ারম্যান পদের ৪ প্রার্থীই দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়েই বিজয় নিয়ে সংশয় রয়েছেন।
কে হচ্ছেন চেয়ারম্যান ! এনিয়ে ইউনিয়ন ছাড়াও সব রাজনৈতিক মহলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে, ৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকলেও দ্বীমুখী নির্বাচনের কথা ভাবছেন এলাকার সুধী মহল। অধিকাংশ ভোটারদের মুখে একটাই বুলি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মাষ্টার জহুরুল ইসলাম এবং ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রাজ্জাকের মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে।
নির্বাচন অফিস সূত্রমতে, ইউনিয়নটিতে ২১ হাজার ২২৬ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৬৭৫ এবং মহিলা ১০ হাজার ৫৫১ জন ভোটার রয়েছেন। ৪ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছাড়াও সাধারন মেম্বর পদে ৩২ জন এবং সংরক্ষিত (মহিলা) ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদে সব প্রার্থী বিজয়ের আশা ব্যক্ত করে বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এমন আশায় মাঠে ময়দানে রয়েছি। কেবলমাত্র প্রার্থী আবদুর রাজ্জাকের অভিযোগ, তার নির্বাচনী কর্মীদের পুলিশী হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। বিএনপির অপর নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুল ইসলাম তুহিন বলেছেন, ভোটের মাঠে কোন ঝামেলা নেই। তিনি বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, হরিহরনগর ইউনিয়নটিতে এখন নির্বাচনী উৎসব চলছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাষ্টার ফরিদ উদ্দীন নির্বাচনে শতভাগ বিজয়ী হবে এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পুলিশ আমার কোন কর্মীকে বাড়িতে ঘুমাতে দিচ্ছে না। শুক্রবার রাতেও আমার কর্মীদের বাড়ি পুলিশ হানা দিয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাষ্টার জহুরুল ইসলাম বলেন ইভিএম নিয়ে কোন শংঙ্কা নেই ভোটারদের মাঝে। আমি যেভাবে ভোটারদের সাথে মিলেমিশে চলাফেরা করি তাতে আমি শতভাগ বিজয়ের আশাবাদি।
এদিকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রশাসন সব ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, হরিহরনগর ইউনিয়ন নির্বাচনে ৩ জন ম্যাজিষ্ট্রেট, ১ প্লাটুন বিজিবি, ১ প্লাটুন র্যাব, প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন এসআই ২ জন এএসআই সহ ৭ জনের একটি মোবাইল টিম প্রতি তিনটি কেন্দ্রের জন্য থাকবে। এ ছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ১৭ জন আনসার সদস্য, ১ জন ইন্সেপেক্টরের নেতৃত্বে ৭ জনের একটি টিম উপস্থিত থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন অফিস। ইভিএম এ ভোট নিতে ইতোমধ্যে ৯৪ টি ইভিএম মেশিন প্রস্তুত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবদুর রশিদ জানান, হরিহরনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু করতে সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করা হয়েছে। ইভিএম প্রদ্ধতিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে ভোট গ্রহণ কাজে ৯ জন প্রিজাইডিং ৬১ জন সহকারী প্রিজাইডিং ও ১২২ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। রোববার দায়িত্ব প্রাপ্তদের হাতে ভোট কেন্দ্রের সকল মালামাল বুঝে দেয়া হয়েছে।