বর্ষায় নৌকা আর শুস্ক মৌসুমে অস্থায়ী ছোট কাঠের ব্রিজ। একটি স্থায়ী সেতুর দাবী যেন দীর্ঘদিনের। এখনকার মানুষের এক কষ্টের নাম সোমেশ্বরী পারাপার।
ভারতের মেঘালয় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশ করেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদী। ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা ৫৮টি নদীর একটি এটি। এই নদীর দুর্গাপুর-শিবগঞ্জ ঘাটে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে শিশুসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গুরুতর অসুস্থ রোগীসহ প্রতিনিয়ত দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। দীর্ঘদিনেও সেতু না হওয়ায় এসব এলাকার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপুর উপজেলাকে দুটি ভাগে ভাগ করেছে এ নদী। একপাশে দুর্গাপুর সদর ও অপর পাশে কুল্লাগড়া ও গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়ন। এই দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষকে নদী পার হয়ে দুর্গাপুর সদর ও বিভিন্নগন্তব্যে পৌঁছতে হয়। প্রতিদিনই হাজারো মানুষের চলাচল এ পথে। প্রতিদিনের যাতায়াতে দুর্গাপুর উপজেলা সদরে পৌঁছতে এই নদী পারাপারে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। শুকনো মৌসুমে গত এক বছর ধরে অস্থায়ী কাঠের ব্রিজে নদীপারের কষ্ট কিছুটা কমলেও বছরের বেশির ভাগ সময়ই নৌকায় পারাপার করতে হয়। একটি সেতু দাবি করে বছরের পর বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়াও সাদা মাটির পাহাড়, বিজয়পুরসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে যাওয়ার একমাত্র পথ এটি। ফলে নদী পারাপারে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পর্যটকদের। যোগাযোগ ব্যবস্থাই শুধু নয় পর্যটন, শিক্ষা, কৃষিসহ স্থানীয় অর্থনীতিতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে একটি সেতু। তাই সোমেশ্বরী নদীর ওপরে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ হলে পাল্টেযাবে এলাকার অর্থনীতির চাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল শাহিদ মিয়া জানান, নদী দিয়ে যুগের পর যুগ কষ্ট করে চলাচল করলেও তাঁদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তবে সেতু হলে দুই পাড়ের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। নদীটি পারাপারে স্থানীয়দের সমস্যা প্রকট হচ্ছে দিন দিন।
শিক্ষক মহিবুল ইসলাম জানান, নদী পারাপারে একটি সেতু খুবই দরকার। শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে নৌকায় পারাপারে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক টাই ঝুঁকি। একটি সেতু নির্মাণ করলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির নিরসন হবে।
কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী পারভেজ মিয়া জানান, বর্ষাকালে সমস্যা এত গুরুতর হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে নৌকা করে তাদের নদী পার হতে হয়। ঘাটে দাঁড়িয়ে থেকেও অতিরিক্ত সময়ই নষ্ট হয়। তাই দ্রুত সোমেশ্বরী নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি তার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজিব-উল-আহসান জানান, বর্ডার রোডে একটি সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে। একটি সেতু নির্মাণ হলে স্থানীয়দের চলাচল ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবিধার পাশাপাশি পর্যটকদেরও যাতায়াতে দুর্ভোগ কমে আসবে।
এ বিষয়ে জানতে নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার খানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।