বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম ইন্টারনেট সেনসেশন হিরো আলম। ডিশ লাইনের ব্যবসা থেকে উঠে আসা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম বিগত সময়গুলোতে একের পর খবরের শিরোনামে থাকছেন। কখনো অভিনয় করে, কখনো বিতর্কিতভাবে গান গেয়ে, কখনো কবিতা আবৃত্তি করে। এমনকি নিজ এলাকা থেকে করেছিলেন জাতীয় নির্বাচনও! একের পর এক কর্মকাণ্ডে আলোচনার শীর্ষে থাকা হিরো আলম এবার নতুন করে এলেন শিরোনামে! এবার আর লোকাল নির্বাচন নয়, একদম পা বাড়ালেন ঢাকাণ্ড১৭ আসনের উপণ্ডনির্বাচনে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে দাঁড়িয়ে নির্বাচনের দিন গনধোলাই ও মারপিটের শিকার হন হিরো আলম। যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় বাংলাদেশের মিডিয়া। তবে হিরো আলমের এই ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের মিডিয়াতেও। বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রতিবেশি দেশ ভারতেও গত কয়েক বছরে হিরো আলমের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ভারতের শীর্ষ গণমাধ্যম ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ হিরো আলমকে নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। “অভিনেতা-সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিরো আলমের মারধরের ভিডিও ভাইরাল, হাসপাতালে ভর্তি”- এই শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “বাংলাদেশে চলমান ঢাকা ১৭ আসনের উপণ্ডনির্বাচনের সময়, অভিনেতা ও সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিরো আলম একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বনানীতে একটি ভোটকেন্দ্রে মর্মান্তিক শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হন। বিকাল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে।” প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, “নির্বাচন কেন্দ্রে টিকটক ভিডিও চিত্রগ্রহণের সময় কিছু ব্যক্তি হিরো আলমের কাছে গিয়ে তার সমালোচনা করেছিলেন। হঠাৎ পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার ফলে শারীরিক হামলার শিকার হন হিরো আলম। তিনি ভবনে প্রবেশ করার সময় হামলাকারীরা তাকে করিডোর থেকে টেনে বের করে নিয়ে যায়। প্রশাসনের লোকজন থাকা সত্ত্বেও হিরো আলমকে একদল লোক নিরলসভাবে তাড়া করে এবং আক্রমণ করে। ভোট কেন্দ্রের সামনের রাস্তায় হামলা চলতে থাকে। অবশেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একটি গাড়িতে করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন হিরো আলম। ” টাইমস অফ ইন্ডিয়া ছাড়াও হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডের মতো শীর্ষ পোর্টালে হিরো আলমের উপর হামলার প্রতিবেদনটি উঠে এসেছে। ১৭ জুলাই বনানীতে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় হামলার শিকার হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম বর্তমানে সুস্থ আছেন। হামলার দিন বিকালে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হিরো আলমকে হামলার ঘটনায় ওই এলাকা থেকে দুজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। বাকীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান আছে বলে জানা গেছে। ঢাকাণ্ড১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন (হিরো আলম)-এর উপর হামলায় উদ্বেগ জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের বাংলাদেশ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। টুইট করেছেন বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। টুইটারে লুইস লেখেন, “সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রত্যেকের মৌলিক মানবাধিকার> তা নিশ্চিত ও সুরক্ষিত করতে হবে।” ১৭ জুলাই সোমবার দুপুরে ঢাকার বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্রে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন হিরো আলম। এরপরই কয়েকজন এসে কটাক্ষ করতে থাকে, ‘এটা টিকটক ভিডিয়ো করার জায়গা নয়। এটা ভোটকেন্দ্র’। এরপরই নাকি হিরো আলমের উপর হামলা শুরু করে সেখানে উপস্থিত 'নৌকা' প্রতীকের ব্যাজ ঝোলানো মানুষজন। আরও পড়ুন: তীব্র গালিগালাজ, রাস্তায় ফেলে পেটানো হল, হাসপাতালে হিরো আলম। ইতিমধ্যেই হিরো আলমের উপর হামলায় জড়িত সন্দেহে সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। হিরো আলমকে মারধরের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া এসেছে আমেরিকার পক্ষ থেকেও। যেখানে বলা হয়েছে, আমেরিকা আশা করে বাংলাদেশ সরকার গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ তদন্ত করবে। সঙ্গে দোষীদের বিচারের পর শাস্তি নিশ্চিত করবে। আমেরিকার বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এই ধরনের হিংসার কোনো জায়গা নেই।’