ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মন্দিরে ঢুকে ৬টি মূর্তি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের দূর্গা মন্দিরে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরই মো. খলিল (৩৯) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। খলিল নাসিরনগর উপজেলার জেঠাগ্রামের মো. মোতালিব মিয়ার ছেলে। রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি জগদীশ সরকার বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতসহ কয়েকটি ধারায় দ্রƒত বিচার আইনে সরাইল থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশ, মামলা ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, শাহজাদাপুর ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত নিয়ামতপুর গ্রামে রয়েছে বেশ কয়েকটি মন্দির। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে গেলে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে পড়ে। সুযোগে গ্রামের দূর্গা মন্দিরে প্রবেশ করে এক যুবক। মন্দিরে রক্ষিত দূর্গা পূঁজার লক্ষী, সরসতি, দূর্গা, কার্তিক, গণেশ ও মহাদেব নামের ৬টি মূর্তি একে একে ভাংচুর করে ওই যুবক। ভাংচুর শেষে চলে যাওয়ার সময় ২/৩ লোক অন্ধকারের মধ্যে যুবককে দেখে পরিচয় জানতে চাইলে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। বিদ্যুৎ আসলে মন্দিরের ভেতরে ৬টি মূর্তি ভাঙ্গাবস্থায় দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন সেখানের বাসিন্দারা। কমিটির লোকজন বিষয়টি উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেন। রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন। মন্দিরের সিসি ফুটেজ দেখে রাত ১০টার দিকে সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আ.স.ম আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে শাহজাদাপুর গ্রামে (বাগহাটি) অভিযান চালিয়ে মো. মঞ্জিলের বাড়ি থেকে মো. খলিল মিয়া নামের যুবককে গ্রেপ্তার করেন। মঞ্জিল মিয়া খলিলের আপন ছোট বোনের জামাতা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি জগদীশ সরকার বাদী হয়ে এ ঘটনায় সরাইল থানায় দ্রƒত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। জগদীশ সরকার বলেন, সিসি ফুটেজে ওই যুবককেই দেখা গেছে। এই ঘটনার পেছনে কোন ষড়যন্ত্র বা আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে এমনটি আমার সন্দেহ হচ্ছে। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে যদিও আমি এলাকার বাহিরে ঘটনা জানার পর খুব গুরূত্ব দিয়ে খুঁজ খবর রেখেছি। তথ্য দিয়ে পুলিশ সমস্যদের সহায়তা করেছি। খলিল চান্দুরা থেকে শাহজাদাপুর তার বোনের বাড়িতে এসেছে। যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সিসি ফুটেজে সব ধরা পড়েছে। চালাকি করে বোনের বাড়িতে গিয়ে পড়নের কাপরও বদল করেছিল। পরবর্তীতে ওই কাপড় গুলিও উদ্ধার করেছেন পুলিশ। খলিল চিহ্নিত দাঙ্গাবাজ। তার বিরূদ্ধে নাসিরনগর থানায় ৩টি মামলা রয়েছে। খলিলের বিরূদ্ধে আইন-শৃঙ্খলার বিঘœ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরী ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দ্রƒত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। তার ব্যাংক হিসাব আছে কিনা। কার সাথে কি ধনণের লেনদেন করে আসছেন ও করছেন? এইসব সহ সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (শুক্রবার সকালে) ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন।