রাজশাহীর পুঠিয়ায় তালুকদার আশ্রয়ণে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এরপর মাদককারবারিদের যাতায়তের সেতুবন্ধন গড়ে উঠেছে। অপরদিকে ওই এলাকাটিতে অসামাজিদ কার্যকলাপ,মাদককারবারিদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু যে স্থানটি ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। পুঠিয়ার এমনো অনেক স্থান রয়েছে,যেখানে হাজারো প্রয়োজনে,শত চেষ্টা করেও এলাকাবাসীরা একটি ব্রিজ নির্মাণ করার সুযোগ পাঁচ্ছেন না। শুধুমাত্র সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছের এলাকার বংশের নাম তালুকদার হওয়ার জন্য ৬৭ লাখ টাকা ব্যয় করে আশ্রয়ণ এলাকায় একটি ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের বারইপাড়া তালুকদার গ্রামে মাত্র ১০৯টি ঘর রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২০২১-২২ অর্ধ বছরের অর্থায়নে ৬৭ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৪ টাকা ব্যয়ে ৫০ ফিট একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। তারপর,যারা যাতায়ত করেন তারা আবার নাটোর জেলা সদর এলাকার মানুষ। নবির উদ্দিন নামের ব্যক্তি বলেন,এখানে শুধু রাষ্ট্রের টাকা অপচয় করা হয়েছে। ব্রিজটি এলাকার সিংহভাগ মানুষের উপকারে আসছে না। যেসব স্থানগুলি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়ত করে সেসব স্থানে এত দামের ব্রিজ করা উচিত ছিল। এখানে পায়ে হাটার মতো একটি পাড়াপাড়ের কালভাট নির্মাণ করলেই যাতায়াত করা যেত। কেরামত আলি বলেন, ব্যক্তি স্বার্থের ব্রিজটি করার জন্য উপজেলার বেশিরভাগ মানুষের কাজে আসছে না। অবশ্য মাদক পাঁচারকারিদের উপকার হয়েছে। এখানে সন্ধ্যা নেমে এলেই মাদককারবারিদের আনাগুনা বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রতিনিধি বলেন, ভারত সীমান্তবর্তী বাঘা, চারঘাট দুই উপজেলা মাদককারবারিরা বর্তমানে তালুকদার গ্রামের ব্রিজটি ব্যবহার করছে। নাটোর জেলা সদরের ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক চলে যাওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এই স্থানটি তাদের নিকট নিরাপদ হওয়ার কারণ, ব্রিজটি পাড় হলেই নাটোর জেলার সীমানা এসে পড়ে। কোনো সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা মাদককারবারিদের ধাওয়া করলেই, ব্রিজের অপপ্রান্তে তাদের লোকজন বিভিন্ন রকম যানবাহন নিয়ে প্রস্তত হয়ে থাকছে। অপদিকে আশ্রয়নে কয়েকটি বাড়িতে মাদক কেনাবেচা ও অসামাজিক কার্যকলাপ করা অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্ট তালুকদার গ্রামের কিছু মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদককারবারিরা বলেন, উপজেলার সদরের রাস্তা দিয়ে মালামাল নিয়ে চলতে গেলে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয় এবং জানমালে ঝুকি রয়েছে। তাই তালুকদার গ্রামের ভেতরের রাস্তাটি নিরাপদ হিসাবে বর্তমানে আমাদের মনে হচ্ছে। আগে মুসা খাঁ নদীর কারণে মাল নিয়ে পাড়াপাড়ের অসুবিধা হতো। ব্রিজটি নির্মাণ হওয়ার পর তালুকদার গ্রামসহ আশপাশে মাদককারবারিদের তৎপরতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হয়। এখানে পায়ে হাটার মতো হালভাট নির্মাণ করলেই কাজ চলত। কেন এত টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ করলেন তিনি বলেন, এখানে কয়েকটি উপজেলার সীমান্ত হওয়ায়,তখন ব্রিজটি করা হয়েছে। ব্রিজটি দিয়ে মাদক পাঁচারের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ ফারুক হোসেন বলেন, তালুকদার গ্রাম দিয়ে মাদককারবারিরা মাদক পাঁচার করছে। এটা আমার জানা ছিল না। আমরা প্রতিদিন মাদক আটক করছি। আগামীতে ওই এলাকার ওপর নজরদারি বাড়িয়ে দেব।