বিরলে সরকারি চাকুরী হতে অবসরপ্রাপ্ত প্রভাবশালী পিতা-পুত্রের হামলায় দিনমজুর পরিবারের নিরীহ ৪ জন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এলাকাবাসী প্রভাবশালী ওই পরিবারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বৈদ্যনাথপুর গ্রামের দিনমজুর আজিজুর প্রতিবেশী সম্পদশালী ও প্রভাবশালী সরকারি চাকুরী হতে অবসরপ্রাপ্ত রিয়াজুল ইসলাম এর জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। জমি চাষ করে ফসল এর অংশ দেয়া-নেয়ার মাঝে রিয়াজুল এর নিকট আজিজুর এর পাওনা দাড়ায় ২ হাজার টাকা। প্রায় এক মাস পূর্বে ওই ২ হাজার টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করে রিয়াজুল ও আজিজুর এর মাঝে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। রিয়াজুল এর বড় ছেলে সরকারি চাকুরী হতে অবসরপ্রাপ্ত মোস্তাফিজুর রহমান পিতার সাথে হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজিজুর এর বাড়িতে এসে হাত-পা ভেঙ্গে জীবনে পঙ্গু করে দেয়ার হুমকি দিলে প্রায় ২২ দিন যাবৎ দিনমজুর আজিজুর ঘর বাড়ী ছেড়ে আশপাশের জঙ্গল ও কবরস্থানে আশ্রয় নেয় এবং গভীর রাতে বাড়ি ফিরে আবার ভোরবেলা হতে লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করে।
গত ২১ জুলাই শুক্রবার সকাল আনুমানিক ৯ টায় কবরস্থানের পাশে আজিজুরকে দেখতে পেয়ে রিয়াজুল ও তার ছেলেসহ সঙ্গীয় লোকজন আজিজুরকে মারপিট করার জন্য ধরতে গেলে আজিজুর দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পায়। এ সময় পাশে থাকা আজিজুর এর ভাই আবু বক্কর এর ছেলে আল আমিন (২২) প্রতিবাদ করলে তাঁকে বাঁশ লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে জখম করা হয়। ছেলেকে মারপিটের প্রতিবাদ করতেই আবু বক্কর (৫০) কে বেধড়ক মারপিটে দুই হাত ও ডান পা ভেঙ্গে ফেলে রড তালা দিয়ে শরীরে এলোপাথাড়ি মারপিট করতে দেখে অপর ছেলে আরমান (১৭) এগিয়ে এলে তাকেও মাথায় আঘাত করা হয়। স্বামী ও সন্তানের মারপিটে আহত হওয়ার সংবাদ পেয়ে লুৎফা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিটে মারাত্মক আহত করা হয়। প্রতিবেশী জাফর উদ্দীন, সিহাব হোসেন, তামান্নাসহ অনেকে আহতদের আত্মচিৎকারে এগিয়ে গেলে প্রভাবশালী রিয়াজুল ভবিষ্যতে মারপিটের ঘটনা নিয়ে কোন মামলা করলে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আহতদের উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
২৪ জুলাই সোমবার বিকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবু বক্কর আমাদের প্রতিবেদককে জানান, আমার ভাইয়ের সাথে লেনদেনকে কেন্দ্র করে আমাকে স্ত্রীসহ সন্তানদের মারপিটে প্রভাবশালী রিয়াজুল এর অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। আমি এ ঘটনায় রিয়াজুল ও তার ছেলেসহ সহযোগীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখাকালীন মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিয়াজুল এর বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।