বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বাংলাদেশে সংস্কৃতিচর্চার একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান। জাতীয় সংস্কৃতির গৌরবময় বিকাশকে অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলার চর্চা ও বিকাশের উদ্দেশে ১৯৭৪ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি বিশেষ আইন দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিস্তৃত করার লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি জেলায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় একজন কালচারাল কর্মকর্তা রয়েছেন, যিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। বর্তমানে এর কার্যক্রম উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে প্রায় দশবছর ধরে কোন অস্তিত্ব নেই বগুড়ার শেরপুর উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির। উপজেলা প্রশাসনের সঠিক তদারকি ও দ্বায়িত্ব হীনতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিল্পকলা একাডেমীর কোন কার্যক্রম নেই বলে মনে করছেন সচেতন মহল। বর্তমানে শিল্পকলা একাডেমীর কক্ষটি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেখা গেছে। সরকারী নিয়মানুযায়ী শিল্পকলা একাডেমি পরিচালনায় ১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থাকার কথা থাকলেও এটা শুধু কাগজ আর কলমে পরিচালিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় সংস্কৃতির গৌরবময় বিকাশকে অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিন্তু তাঁর এ স্বপ্নকে কেন বাধাগ্রস্থ করছেন স্থানীয় প্রশাসন? কেনই বা সংস্কৃতি জগৎ থেকে পিছিয়ে রেখেছেন শেরপুর কে এমন ক্ষোভ সঙ্গীত প্রেমীদের। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে চেয়ার, টেবিল, হারমোনিয়াম, কীবোর্ড সহ সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র ক্রয় করা হলেও এগুলো এখন কিছু কর্মকর্তার দখলে বলে অভিযোগ উঠেছে। সমাজের কোমলমতি শিশুদের মাদক ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে সাংস্কৃতিক চর্চার যখন বিকল্প নেই তখন সেই চর্চা কেন্দ্র বন্ধ করে রেখেছেন উপজেলা প্রশাসন। অপরদিকে উপজেলা শিল্পকলার নামে যে সরকারি বরাদ্দ আসে সেই অর্থ গুলো কোথায় যাচ্ছে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষদের মাঝে। দ্রুত সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি পুনর্গঠন করে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে সঙ্গীত, নৃত্য, চারু ও কারুকলার শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবিও জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
এ ব্যাপারে ৭৫ বছর বয়সী গানের শিক্ষক ওস্তাদ আবুল কাশেম বলেন, একসময় শিল্পকলা একাডেমীর অবস্থা রমরমা ছিল। তখন শিল্পীও বের হয়েছে অনেক। এখন শিল্পকলা একাডেমীর ঘরও নেই যন্ত্রপাতীও নেই। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সেই চর্চা না থাকায় সাংস্কৃতিক বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছে শেরপুর উপজেলা।
এ বিষয়ে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য সচিব ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুবীর কুমার পালের সাথে কথা বললে তিনি জানান, শিল্পকলা একাডেমীর জন্য একটি রুম নিয়ে খুব দ্রুত সংগীত চর্চার ব্যবস্থা ও পরিচালনার জন্য কার্যকরী কমিটি করা হবে।
এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. সানজিদা সুলতানা বলেন, আমি যোগদান করার পর থেকেই দেখছি শিল্পকলা একাডেমীর এই অবস্থ্ াতবে খুব দ্রুত এর সমাধান করা হবে এবং একটি নির্দৃষ্ট কার্যালয় স্থাপন করা হবে।