বিরলে জমি জমার বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’দফায় মারপিটের ঘটনায় আহত হয়েছে ৬ জন। আহতদের বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আহত আবদুল কাফি জানান, বিরল উপজেলার ৪নং শহরগ্রাম ইউনিয়নের ওকড়া গ্রামের মৃত সুলতান আলীর স্ত্রী হাফেজা বেগম এর নামীয় সম্পত্তি একই গ্রামের মৃত মহির উদ্দীন এর ছেলে প্রতিপক্ষ আবুল কালাম (৪৫), মৃত সফিরত আলী এর ছেলে আবদুর রাজ্জাক (৫৫) ও আনছার আলী (৪৭) এর সঙ্গীয় লোকেরা তাদের সম্পত্তি বলে দাবি করে বিরোধের সৃষ্টি করে আসছে। এ ঘটনায় ইতঃপূর্বে হাফেজা বিরল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে একাধিকবার শালিস বৈঠক হয়। প্রতিপক্ষ আবুল কালাম, আবদুর রাজ্জাক ও আনছার আলীগণ শালিস না মেনে হাফেজা বেগমের নামীয় সম্পত্তি জবর দখল করার অপচেষ্টা করতে থাকে। এমতাবস্থায় গত ২২ জুলাই শনিবার দুপুরে প্রতিপক্ষরা পুর্ব পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিরোধীয় সম্পত্তিতে জোড়পুর্বক ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে। এতে সম্পত্তির মালিক বিধবা হাফেজা বেগম, তাঁর মেঝো ভাই শাহাদৎ ও তার ছেলে হাইকুল বাঁধা প্রদান করায় বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। বাক-বিতন্ডার একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ মৃত মহির উদ্দীন এর ছেলে আবুল কালাম (৪৫), মৃত সফিরত আলী এর ছেলে আবদুর রাজ্জাক (৫৫), আনছার আলী (৪৭), আবদুর রাজ্জাক এর ছেলে সাইবুর রহমান (৩২), আবুল কালাম এর ছেলে জসিম উদ্দীন (২২), মৃত খতির উদ্দীন এর ছেলে আহেদ আলী (৫২), ফাজু মোহাম্মদ এর ছেলে মাসুদ রানা (২৭), আবুল কালাম এর স্ত্রী জোসনা খাতুন (৪২), শফিকুল ইসলাম এর স্ত্রী শহর বানু (৩৭) উত্তেজিত হয়ে হাফেজা বেগমসহ তার সাথে থাকা ভাই ও ছেলেকে এলোপাথারীভাবে মারপিট করতে থাকে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে বিধবা হাফেজা বেগম ও তার ভাই শাহাদৎ হোসেনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। হাফেজা বেগম এর ছেলে হাইকুল স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা গ্রহন করে। এ ঘটনায় হাফেজা বেগম বাদি হয়ে উল্লিখিত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে বিরল থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ এজাহার পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয়পক্ষকে থানায় কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেন। এরইমধ্যে প্রতিপক্ষ গংরা পুলিশের কথায় তোয়াক্কা না করে ওই সম্পত্তিতে পাকা ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে। ওই সম্পত্তির মালিক হাফেজা বেগমের পক্ষে ন্যায় সঙ্গত কথা বলা এবং পুলিশকে সংবাদ দেওয়ায় স্থানীয় সমাজসেবক আবদুল কাফি কাগজপত্র অনুযায়ী গত ২৮ জুলাই শুক্রবার বিকেলে বাড়ি থেকে নাড়াবাড়ী হাটে যাওয়ার পথে আটক করে আবুল কালাম এর সঙ্গীয় লোকেরা তাকে বেদম প্রহার করে। আত্মচিৎকারে কাফি এর স্ত্রী ছালমা খাতুন (৫০) ও তার ছেলে সালেহুর রহমান (২৫) এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এলোপাথারীভাবে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আবুল কালাম গংরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানকে উদ্ধার করে প্রথমে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কাফি এর মাথায় ১৫ টি, কাফি এর স্ত্রী ছালমার মাথায় ৩ টি এবং ছেলে সালেহুর রহমান এর মাথায় ৩ টি সেলাই হয়েছে বলে ভুক্তভোগি কাফি জানায়। তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গুরত্বর আহত কাফি ও তাঁর স্ত্রী ছালমা খাতুন দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ভুক্তভোগি কাফি স্থানীয় আইন প্রয়োগকারি সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল হাসান পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মারপিটের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন পূর্বের ঘটনায় হাফেজা বেগম থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়কে শান্ত থাকতে বলেছি। পরবর্তী মারপিটের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ কেউ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।