নির্বাচনের এখনো পাঁচ মাস দেরি থাকলেও নির্বাচন কি ধরনের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম ও পাল্টা কর্মসূচি চলছে। যার ফলে রাজনীতির মাঠ ক্রমেই সংঘাত সংঘর্ষের দিকে এগোচ্ছে। গত ২৮ জুলাই বিএনপি ঢাকায় মহা-সমাবেশ করেছে। আর ২৯ জুলাই পরদিন রাজধানীর চার প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। এ কর্মসূচি ঘিরে কিছু স্থানে সংঘাত-সংঘর্ষ ঘটেছে, হয়েছে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ। বিএনপি বলছে, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চেয়েছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ যৌথ ভাবে তাদের আঘাত করেছে। অন্যদিকে সরকারি দল বিএনপির অবরোধ, ঘেরাও অবস্থান কর্মসূচি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির এবং সরকার অচল করার কর্মসূচি বলে মনে করছে। গত ডিসেম্বর থেকে বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ রাজপথে রয়েছে। এখন থেকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিদিনই কোনো না কোনো কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। যাতে কেউ বিএনপির পাল্টা হিসেবে প্রচার না করতে পারে। এদিকে ৩০ জুলাই আওয়ামী লীগ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির সন্ত্রাস-অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে। আর ৩১ জুলাই বিএনপির সরকারের দমন পীড়নের বিরুদ্ধে জেলা ও বিভাগীয় শহরে গন-সমাবেশ করেছে। ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় সমাবেশ করেছে। বিএনপি এখন একদফার দাবিতে রাজপথে নিজেদের দখলে রাখতে চায়। অন্যদিকে সরকারি দল বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে তার শক্তি প্রদর্শন করতে চায়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজপথে শক্তি প্রদর্শন নয়, আলোচনার টেবিলে সব মীমাংসা করতে হয়। আর কে কতটা জনপ্রিয় তা নির্ধারিত হয় ভোটের মাধ্যমে। বিগত অর্ধ শতাব্দীতে তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া সব সরকারের আমলেই অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যার ফলে নির্বাচন এলেই নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে যে আন্দোলন সংগ্রাম চলছে, তাতে জনগণ বিরক্ত।রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশ করার অধিকার যেমন রয়েছে, তেমনি জনদূর্ভোগ সৃষ্টির কোনো অধিকার কারো নেই। এমনিই নিত্য-পণ্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে জনগণ কষ্টে আছে। তারপর আন্দোলন সংগ্রামের কারণে সৃষ্ট জনদূর্ভোগ কেউ সহ্য করতে চাইছেন না। তাই উভয় পক্ষের উচিত আলোচনার টেবিলে বসে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া। রাজপথে সংঘাত -সংঘর্ষ জীবন কেড়ে নেয় জনজীবনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। সংগত কারণে সংশ্লিষ্টরা রাজপথ ছেড়ে আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করবেন, এটাই সবার চাওয়া।