খুলনার পাইকগাছায় দীর্ঘ দশ বছর যাবৎ নদ-নদীর চরভরাটি খাসজমি স্থানীয় ভূমিহীনদের মাঝে একসনা বন্দোবস্ত বন্ধ থাকায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি বেদখল হচ্ছে নদ-নদীর চরভরাটি খাসজমি। এই সুযোগে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা এ সকল চরভরাটি সরকারি খাসজমি দখল করে গড়ে তুলছে অবৈধ নানা স্থাপনা। আবার এসব নদ-নদীর চর দখল করে বিকিনিকির যেমন অভিযোগ রয়েছে তেমনি দখল পাল্টা-দখলকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে অহরহ সংঘর্ষ ঘটছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সর্বশেষ ২০১২-১৩ অর্থবছরে ভূমিহীনদের মাঝে খাসজমি একসনা বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। এরপর থেকে অদ্যাবধি সরকারিভাবে একসনা বন্দোবস্ত প্রদান বন্ধ রয়েছে। ১২-১৩ অর্থবছরে প্রায় ২ হাজার একর নদ-নদীর চরভরাটি খাসজমি একসনা বন্দোবস্ত প্রদানের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছিল। বর্তমানে এ উপজেলায় নদ-নদীর চরভরাটি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় পাঁচ থেকে সাত হাজার একরে দাঁড়িয়েছে। সে হিসাবে বাৎসরিক রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়ায় কমপক্ষে ৮০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বিগত দশ বছরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় অন্তত ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা। এ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হয়েছে শুধুমাত্র একসনা বন্দোবস্ত প্রদান বন্ধ থাকার কারনে। সূত্রটি আরও জানায়, এই উপজেলায় বিভিন্ন মৎস্য ঘেরের মধ্যে সরকারি খাসজমি রয়েছে প্রায় ২০০০ একর অর্থাৎ ৬০০০ বিঘা। যার বাৎসরিক রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা প্রায় ২৫ লাখ টাকা। একসনা বন্দোবস্ত প্রদান চালু না থাকায় এলাকার প্রভাবশালী ঘের মালিকরা অবৈধভাবে এসব নদ-নদীর চরভরাটি খাসজমি ফিল্ম স্টাইলে দখল নিচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একসনা বন্দোবস্ত প্রদান সরকারিভাবে পাইকগাছা উপজেলায় বন্ধ থাকলেও চরভরাটি জমি খালি পড়ে নেই। সেখানে প্রভাবশালীরা দখল করে ধান-মাছ চাষ করছেন, আবার অনেকে কাঁচা-পাকা বিভিন্ন স্থাপনাও গড়ে তুলছেন। এ ব্যাপারে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পরবর্তীতে তাদেরকে উচ্ছেদ করতেও অনেক বেগ পোহাতে হবে সরকারকে। স্থানীয় ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে এ সকল খাসজমি একসনা বন্দোবস্ত প্রদান করা হলে সরকার যেমন প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারবে, তেমনি বাস্তুহারা ভূমিহীন কৃষক পরিবারের মাঝেও সচ্ছলতা ফিরে আসবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।