চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় পারিবারিক কলহের জের ধরে বাবা ছেরাগ আলী (৭৫) কে ধারালো দা দিয়ে মাথা, চোখ ও কানে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ছেলে ইমরান হোসেন আকবর (৪০) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনদায়ে আরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার (২ আগষ্ট) দুপুরে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মহসিনুল হক এই রায় দেন। আসামির উপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন তিনি। দন্ডপ্রাপ্ত ইমরান হোসেন আকবর উপজেলার সেতি নারায়নপুর গ্রামের বড় বাড়ীর ছেরাগ আলীর ছেলে। হত্যার শিকার ছেরাগ আলীর পিতার নাম মৃত আবদুর রহমান।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইমরান ছিলেন উশৃংখল প্রকৃতির। তিনি নিজ স্ত্রী ও সন্তানকে প্রায়ই মারধর করতেন। যার কারণে ২০১৭ সালে স্ত্রী ও সন্তান পিত্রালয়ে চলে যায়।
এরপর ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে নিজ বাড়ীতে পারিবারিক বিষয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ইমরান ধারালো দা দিয়ে তার বাবার মাথা, চোখ ও কানে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেন। ঘটনাস্থলেই ছেরাগ আলীর মৃত্যু হয়। ওই সময় তার মা ফুলমতি বেগম স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাকেও মেরে আহত করেন ইমরান।
পরিবারের লোকজন ফুলমতি বেগম উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং পুলিশ এসে ছেরাগ আলীর মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন। ঘটনার পর ইমরান হোসেন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় ওই দিনই শাহরাস্তি থানায় ইমরানকে হত্যা মামলার আসামি করে ছোট ভাই মো. সোলেমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর ২১ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহরাস্তি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আনিছুর রহমান আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। এরপর ওই বছর ২ নভেম্বর তদন্ত শেষে তিনি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) রনজিত রায় চৌধুরী জানান, মামলাটি ৩ বছরের অধিক সময় চলা অবস্থায় আদালত ১০ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। স্বাক্ষ্য ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় দেন। মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া।