একটি অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সকল দলের মধ্যে সংলাপ ও পারস্পরিক সমঝোতা প্রয়োজন। বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে দলগুলোকে আলাপণ্ডআলোচনার মধ্য দিয়েই সমঝোতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সমঝোতাসূত্র নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু বিরাজমান পরিস্থিতি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়। এ কারণে বিদেশি শক্তি হস্তক্ষেপের সুযোগ নিচ্ছে। নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশে বিশ্ব মোড়লদের খবরদারি দুঃখজনক।
শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে সচেতন নাগরিক ও বিশিষ্টজনরা এ মন্তব্য করেন। রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বানে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটি এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গীরা চায় বর্তমান সংবিধানের আলোকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। অপরদিকে বিএনপিসহ আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলো চায় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ইতোমধ্যেই ‘সরকারের পদত্যাগ’র এক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজপথ ততই উত্তপ্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। রাজপথে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।
দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে ধরণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তাতে দুঃখ প্রকাশ করেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত অবিলম্বে তাঁদের অবস্থান পরিবর্তন করা। তাদের মধ্যে সমঝোতা হওয়া জরুরি। আর যদি না হয় তাহলে সামনের দিনগুলোতে জাতিগতভাবে আমরা চরম সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হতে পারি। দেশ চলে যেতে পারে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে - যা কারোই কাম্য নয়।
মানববন্ধনে সুজন রংপুর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- মহানগরের সাধারণ
সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মোহাম্মদ নাসিম, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হায়দার স্বাধীন, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রুম্মানা জামান, বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি সামসি আরা জামান কলি, জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনস্বার্থে অবিলম্বে সংলাপে বসে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানিয়ে সুজন নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোসহ জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শক্তিশালী করতে হবে। দলীয়করণের প্রভাবমুক্ত রাখা ও নিয়োগ আইন প্রণয়ন এবং আইনের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপণ্ডআলোচনা ও প্রয়োজনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সুজন মহানগরের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবায়েত হোসেন খান, সদস্য ফরহাদুজ্জামান ফারুক, মাহফুজুল ইসলাম প্রিন্স, শিক্ষক ও সংগঠক ড. নাসিমা আকতার, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আফজাল, বাংলাদেশ তৃণমূল সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটির রংপুর জেলা সভাপতি কামরুল হাসান টিটু প্রমুখ।