পাবনার সুজানগরের অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল অর্জন করতে প্রাইভেট শিক্ষকদের উপর নির্ভশীল হয়ে পড়েছে। প্রাইভেট পড়া ছাড়া ভাল ফলাফল অর্জন করা যেন কোনভাবেই সম্ভব নয়। ফলে তারা প্রাইভেট শিক্ষকদের নিকট ধর্না দিচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সুজানগর পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৩৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওইসব বিদ্যালয়ের মধ্যে খুব কম বিদ্যালয় রয়েছে যেখানে সন্তোষজনক লেখা-পড়া হয়। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে তেমন লেখা-পড়া হয়না। ফলে ওই সব বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী জানুয়ারী মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ১২মাস প্রাইভেট পড়ে থাকে। আর এর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষার আগ পর্যন্ত অর্থাৎ ১২মাসসহ মোট ১৪মাস প্রাইভেট পড়তে হয়। অন্যথায় তারা পরীক্ষায় ভাল ফলা-ফল অর্জন করতে পারেনা। অভিভাবকরা জানায়, অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩/৪জন করে শিক্ষক আছেন যারা উপজেলায় ভাল প্রাইভেট শিক্ষক হিসেবে বেশ পরিচিত। তারা বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের চেয়ে প্রাইভেট পড়াতেই বেশি আগ্রহী। এদের মধ্যে অনেক শিক্ষক আবার শিক্ষার্থীদেরকে ভাল ফলাফলের জন্য প্রাইভেট পড়তে উৎসাহিত করেন। ফলে অভিভাবকরা নিরুপায় হয়ে তাদের সন্তানের ভাল ফলাফলের জন্য ওই সকল শিক্ষকদের কাছে ধর্না দেন। নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন অধিকাংশ প্রাইভেট শিক্ষক তাদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ের আশপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে আবার কেইবা বাড়িতে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সু-ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তারা সরকারের নিয়ম নীতিকে উপেক্ষা করে সকালে এবং বিকালে শ্রেণি কক্ষের ন্যায় প্রতি ব্যাচে ৩০থেকে ৪০জন করে শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ায়ে থাকেন। বিশেষ করে অঙ্ক এবং ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষকরা শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের চেয়ে প্রাইভেট পড়াতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বয়ং একটি উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বলেন ওই সকল শিক্ষকদের প্রাইভেট বাণিজ্যের কারণে বিদ্যালয়ে যথাযথ পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। আর এতে সরকারের সময়োপযোগী তথা মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্য ভেস্তে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন প্রাইভেট এবং কোচিং বাণিজ্যের এ চিত্র দেশ ব্যাপি। সুতরাং ওই বাণিজ্য বন্ধে প্রয়োজন সরকারের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ।