পিতা দিনমজুর মাটিকেটে জমিতে কাজকরে সেই কাজের আয়দিয়ে ৫ জনেরর সংসারের ঘানি টানছে। পিতা জমিতে কাজ করে, মা সংসারে কাজে সারদিন ব্যস্থ। পিতার প্রতিদিন কাজ থাকেনা। অভাবেব সংসার নিয়মিত খাবার জোটেনা কি করে আমার লেখা পড়া করাবে। পিতা-মাতার সাংসারিক কষ্ট দেখে আমার মনের মধ্য একপ্রকারজিদ চলে আসে। আমি মাকে ঘরের কাজে সহযোগিতার পাসাপাসি প্রাইভেট পরিয়ে যে টাকা উপাজন করি সেই টাকা দিয়ে আমি আমার লেখাপড়াটা চালিয়ে যাই। বাড়ি থেকে স্কুল চার কিলোমিটার দুরে প্রতিদিন হেটে যতাযাত করতাম। অভাবে সংসারে ভালোখাবার খেতে পারি নাই। ভালো জামা পড়তে পানি নাই। তার পরেও লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। আমার ইচ্ছে আমি একজন ডাক্তার হবো। ছোটবেলা আমার প্রাইমাড়ির স্যারেরা বলতো তুমি বড় হয়ে ডাক্তার হবে। আমার সেই থেকে ইচ্ছে ডাক্তার হবার। স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে সহযোগিতা করেন। আমি জিপিএ-৫ পাওয়াতে শিক্ষ ও আমার পিতা-মাতা খুবই খুশি হয়েছেন। ভবিষ্যতে আমি একজন ডাক্তার হয়ে অসহায় গরিব মানুষের পাশে থাকতে চাই। শত বাধা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করা এবং তার স্বপ্নের কথা এভাবেই জানাচ্ছিল হাফছা আক্তার। সে বরিশালের আগৈলঝাড়ার উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের অশোকসেন গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর কৃষক মো.আলামিন সরদার ও গৃহিনী হাসনেহানা মেয়ে। মেধাবী শিক্ষার্থী হফছা আক্তার সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তার পিতা মো.আল-আমীন সরদারে বলেন, আমি গরীব আমার পক্ষে হাফছা আক্তারকে লেখাপড়ার জন্য কলেজে ভর্তির সম্বল নাই। আমি নিদমজুর আমার আয় দিয়ে, আমার সংসার চলে। হাফছা তার মনবল না হরিয়ে বহুকষ্টের মধ্যেদিয়ে তার লেখাপড়া চালিয়ে ভাল ফল করেছে। এব্যপারে সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.জহিরুল হক জানান, মেধাবী ছাত্র হাফছা আক্তার তার ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
সঞ্জিতের ডাক্তার হবার স্বপ্ন অনিশ্চিত:- বরিশালের আগৈলঝাড়ার উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের কোদালধোয়া গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর গুনধর ওঝার ছেলে সঞ্জিত ওঝা চলতি এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার কোদালধোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। দিনমজুর গরীব পিতার পক্ষে সঞ্জিত ওঝাকে লেখাপড়ার কারো জন্য কলেজে ভর্তি করানো তাদের কোন সম্বল নাই। তাই সঞ্জিত ওঝা স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া করে একজন ডাক্তার হবে। ডাক্তার হয়ে এলাকার মানুষের চিকিৎসা কারবে সে আসা তার পুরন হবেনা। অর্থাভাবে তার পড়া আর নাও হতে পারে।
সঞ্জিত ওঝা বলে, আমার লেখা পড়া একপর্যায়ে বন্ধ হবার পথেছিলো। আমিও বাবার মতো অন্যের জমিতে কাজ সেই টাকা দিয়ে আমার লেখাপড়ার খরচ চালাতাম।আমার স্বপ্ন একজন ডাক্তার হবার। আমার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হবে কিনা যানি না। আমি কি ভাবে কলেজে ভর্তি হবো সেই চিন্তা করছি। আমার মা একজন গৃহিণী।
জিতুর ডাক্তার হতে চায় :- উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পাকুরিতা গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর সুশান্ত পান্ডের ছেলে জিতু পান্ডে চলতি এসএসসি পরিক্ষায় উপজেলার বাকাল নিরাঞ্জ ধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। দিনমজুর গরীব পিতার পক্ষে জিতু পান্ডেকে লেখাপড়ার জন্য কলেজে ভর্তি কানো তাদের কোন সম্বল নাই। তাই জিতু পান্ডের স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া করে একজন ডাক্তার হবে। ডাক্তার হয়ে গরিব রোগীদের বিনামূল্য চিকিৎসা কারে। তার ডাক্তার হবার আসা অন্ধকারে দিকে।
জিতু পান্ডে বলে, বাবার আয় দিয়ে আমাদের পরিবারে খরচ চালিয়ে আমার লেখাপড়ার খরচ চলাতে পারতো না। আমার লেখা পড়া একপর্যায়ে বন্ধ হবার পথেছিলো। আমিও বাবার মতো অন্যের জমিতে কাজ সেই টাকায় পেতাম সেই টাকা দিয়ে আমার লেখাপড়ার খরচ চালাতাম। ২০২৩ সালের এসএসসি পরিক্ষায় বাকাল নিরাঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমার স্বপ্ন একজন ডাক্তার হবার। আমার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হবে কিনা যানি না। আমি কি ভাবে কলেজে ভর্তি হবো সোই চিন্তা করছে। আমারা দুই ভাই বোন। আমি বড় বোন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। আমার মা একজন গৃহিণী। আমি মানুষের জমিতে কাজ করে লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছিলাম। এখন বর্ষাকাল কোথাও কাজ পাওয়া যায় না।
ছাইদুল সরদারে কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত:- উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামের দিনমজুর মো.বাবুল সরদারের ছোট ছেলে মো.ছাইদুল সরদার চলতি এসএসসি পরিক্ষায় সরকারী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তিন ভাই বোনের মধ্যে ছাইদুল সবার ছোট। তার বড় ভাই শাওন সরদার ডিগ্রীতে ঢাকার একটি কলেজে লেখাপড়া করছেন। গরীব পিতার পক্ষে ছাইদুল সরদারকে লেখাপড়ার জন্য ভালোকোন কলেজে ভর্তি কানো তাদের কোন সম্বল নাই। তাই ছাইদুল সরদারের ডাক্তার হবার স্বপ্ন অন্ধকারে।
মো.ছাইদুল সরদার বলেন, আমি অন্যের জমিতে কাজ ও প্রাইভেট পড়িয়ে সেই আয়ের টাকায় দিয়ে আমার পড়ালেখার খরচ চালাতাম। এসএসসি পরিক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও আমার স্বপ্ন পূরণ হবে না।