মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে ট্রলার ডুবি ঘটনায়, সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। রোববার বেলা ১১ টার মধ্যে লাশ গুলো দাফন করা সম্পন্ন হয়েছে।
জানা যায়, শনিবার ৫ই আগস্ট উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর মেম্বার এর ঘাট থেকে সকাল ৭ টায় পদ্মাসেতু দেখার জন্য মাঝি সহ ৪৬ জন পিকনিকের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সারাদিন আনন্দ ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ট্রলারটি রাত সাড়ে ৮ টার দিকে লৌহজং উপজেলার রসকাঠি এলাকায় তালতলা-ডহুরী খালে (গৌরগঞ্জ খাল) এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি খালি বাল্কহেডের সাথে ধাক্কা লেগে সাথে সাথেই ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ট্রলারে থাকা ৪৬ জনের মধ্যে ৩৬ জন সাতঁরে ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রাণে বেঁচে যায়। আর বাকি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয় ও তিনজন শিশু এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। তারা আরো জানান, শনিবার রাতে এক নারী ও রোববার আরো ৪ জনের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আর বাকি দুই নারীর লাশ এখনো মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন লতব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর কন্টাকটারের স্ত্রী এ্যাপি (৩০) দুই সন্তান সাকিবুল ইসলাম (১০) ও সাজিবুল ইসলাম (৫) বছর। আফসার দেওয়ানের স্ত্রী পপি (৩৫), কুয়েত প্রবাসী ফিরুজ সরকারের ছেলে ফারিয়ান (৯), শাহাদাত হোসেনের চার মাসের মেয়ে রোজা মনি, প্রবাসী শাজাহান হোসেনের স্ত্রী মোরশেদা বেগম (৪০) তারা সকলেই এ কী গ্রামের।
নিখোঁজ তিনজন শিশু হলো, খিদিরপুর গ্রামের রুবেল হোসেনের ছেলে মাহির (৫), পাশের কয়রাখোলা গ্রামের আরিফ হোসেনের ছেলে তোরান (৭) ও মেয়ে নাবা (৪) বছর।
বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী খিদিরপুর গ্রামের মোক্তার হোসেন ৪৮ বলেন, আমরা মাওয়া পদ্মা সেতু দেখে বাড়ি ফেরার পথে লৌহজং উপজেলার রসকাঠি এলাকায় আসি, তখন বিপরীত দিক থেকে একটি খালি বাল্কহেট রাতের অন্ধকারে আমাদের ট্রলারের উপরে উঠে যায়, কোন লাইট না থাকায় বাল্কহেডটি দেখা যায় নাই। সাথে সাথে আমাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। আমাদের ট্রলারে মাঝি সহ ৪৬ জন লোক ছিল। তার মধ্যে ৭ জন মারা যায় ৩ জনকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায় নাই।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরীফুল আলম তানভীর বলেন, মৃত প্রত্যেক পরিবারকে দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ প্রদান করা হয় ও মৃত ব্যক্তিদের নামে যোহরের নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া করা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষনিক তাদের পরিবারের খোঁজ খবর রাখছি।
এছাড়া রোববার বেলা ১১ টায় দূর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়। শনিবার রাতে ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ উদ্ধার অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান পরিদর্শন করেছেন।