অর্থনীতিবিদদের কাছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করেই দারিদ্র্য বিমোচন ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। আগে কেন ১৮ শতাংশে দারিদ্র্যের হার আসেনি? আমি অর্থনীতিবিদদের কাছে জিজ্ঞাসা করবো, তারা কোন অংকে এসব করেন? ২০০৯ সালের আগে কি এনজিও ঋণের কারণে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে? হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রতিটি পদক্ষেপেই কর্মমুখী। রোববার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতির প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্যতার হার ৪১ শতাংশ ছিল। সেখান থেকে আমরা কমিয়ে ১৮ তে নিয়ে এসেছি। একটি পত্রিকায় অর্থনীতিবিদদের আর্টিকেল পরলাম। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্যতার হার কমেছে- শুধু নাকি দুটি ক্ষুদ্রঋণের প্রতিষ্ঠানের কারণে। সে ভদ্রলোকের নাম আমি বলবো না, আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, যদি এনজিওদের ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য বিমোচন হয়ে থাকে তাহলে আগে কেন হলো না? সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের সম্মানের বাংলাদেশ। আমার যখন স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি তখন জাতিসংঘ আমাদের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার ফলে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকে। বাংলাদেশের মানুষ কি চান উন্নয়নশীল মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলুক? বাংলাদেশের জনগণকে প্রশ্ন করবেন, কারণ জনগণের হচ্ছে ভোটের মালিক। তারা যদি চায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে, তাহলে নৌকা মার্কা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে। আওয়ামী লীগ ভোট পেলেই এটা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনাস্থা সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। যা বাংলাদেশে ‘ওয়ান ইলেভেন’ নামে পরিচিত। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেদিন বিকেলে জরুরি অবস্থা জারির পর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন তৎকালীন গভর্নর ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ওয়ান-ইলেভেন প্রসঙ্গটি এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণেই ওয়ান ইলেভেন হয়েছিল। খালেদা জিয়া ভোটচোর হিসেবে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের কারণে আওয়ামী লীগ হেরেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় এবং দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্তের কারণে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি আওয়ামী লীগ। ভোটচুরি করলে দেশের মানুষ মেনে নেয় না বলেই খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। জনগণই ভোটের মালিক। আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে চলতে পারবে দেশের মানুষ। আওয়ামী লীগের কোনো প্রভু নেই। জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু। নির্বাচনের বিষয়ে জনগণের প্রতিই আওয়ামী লীগ দায়বদ্ধ। তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। বিএনপির হাতে দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদ নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান- সবাই খুনি।