রূপসার ঘাটভোগ ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামে পিতার জমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে প্রকৃত শরিকদের জমি থেকে উচ্ছেদ করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টায় রূপসা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আলাইপুর গ্রামের মৃত আবদুল লতিফ খানের ছেলে মোঃ নুর আলী খান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার পিতা আবদুল লতিফ খান জীবিত থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালে আমার মেজ ভাই মোঃ আইয়ুব আলী খান পিতার নামে থাকা আলাইপুর মৌজায় সাবেক জেএল নং-৪৯, হাল জেএল নং ৪১, সিএস খতিয়ান নং- ৮৯৭/১, এসএ ১০৪৯, ১০৫৩, আরএস খতিয়ান নং- ২৮৪, এসএ দাগ নং ৫০২২, আরএস দাগ নং- ৬০২৮ জমির পরিমাণ ০.১২ একর, এসএ দাগ নং ৫০২৭, আরএস দাগনং- ৬০৪১, জমির পরিমান ০.১৩ একর (বসতবাড়ি)। একই মৌজার সিএস খতিয়ান নং ৬৫৬/১, এসএ খতিয়ান নং- ৭১৫, আরএস খতিয়ান নং ২৮৫, এসএ দাগ নং ৩৯০১, ৩৯০৩, ৩৯০৪, ৩৯০৫, আরএস দাগ নং ৪১৯৯, জমির পরিমাণ ০.৮৪ একরের মধ্যে ০.৪২ একর, এসএ দাগ নং- ৪০৬৩, ৪০৬৪, আরএস দাগ নং- ৪৯৯০, জমির পরিমাণ ০.০৬ একরের মধ্যে ০.০৫৪৩ একর। মোট জমির পরিমাণ .৭২৪৩ একর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রূপসা সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে হেবা দলিল করে নেয়। যার দলিল নং-১৯১১, তাং- ১৮/০৮/২০১৯। জমি দলিল করার একমাস আমার পিতা জমি জাল-জালিয়াতির কথা জানতে পেরে যুগ্ম-জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালত, খুলনায় মামলা দায়ের করেন। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০২১ সালে আমার পিতা মারা যান।
পিতার মৃত্যুর পর আমরা অন্যান্য শরিকরা (৫ ভাই ও দুই বোন) যৌথভাবে মামলাটি চালিয়ে আসছি। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় আমার মেজভাই আইয়ুব আলী আমাদেরকে ওই জমি থেকে উচ্ছেদের জন্য নানাভাবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, একসময় রূপসা এলাকা চরমপন্থ’ী সন্ত্রাসীদের রামরাজত্বে পরিণত থাকা অবস্থায় আইয়ুব আলী তৎকালীণ সময় চরমপন্থীদের গডফাদার রশিদ বাহিনীর কিলার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তার নামে অর্ধশত মামলা রয়েছে। ১৯৯৮ সালে সরকার সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলে আইয়ুব আলী অস্ত্র-সস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। পরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ট্রেনিং করা অবস্থায় পালিয়ে চলে এসে আবারো সন্ত্রাসী কর্মকা-ে লিপ্ত হয়। আইয়ুব আলী শুধু সন্ত্রাসী নয়, সে এলাকার একজন চিহ্নিত মামলাবাজ। পিতার জমি জাল-জালিয়াতি করে নেয়ার জন্য সে আমাদের অন্যান্য ভাই-বোনদের নামে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এমনকি সে তার ২য় স্ত্রীকে দিয়ে আমাদের নামে একটি মামলা দায়ের করে। পরে আবারো তাকে দিয়ে আমাদের নামে মামলা দায়ের করার চেষ্টা চালাতে গেলে তাতে সে রাজি না হওয়ায় ওই স্ত্রীকে আইয়ুব আলী তালাক দিয়ে দেয়। ভাই-বোনদের নামে অকারণে মিথ্যা মামলা দায়ের এর বিষয় আমার পিতা বহুবার প্রতিবাদ করেছেন। এমনকি স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে তাকে এইসব মিথ্যা মামলা দায়ের থেকে বিরত রাখার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমার পিতা নিজের নাম স্বাক্ষর করতে অক্ষম থাকলেও জমি জাল দলিল করার সময় তার নাম স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। সে আমাদেরকে মাদক দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে হয়রানী করার হুমকি প্রদান করছে। প্রতিনিয়ত আমাদের বাড়ি, অন্যান্য জমি এবং সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এ ছাড়া এই আইয়ুব আলীর সমাজ বিরোধী অপরাধমুলক কর্মকা- সমর্থন না করায় কারণে অকারণে এলাকার নিরিহ মানুষের নামে অর্ধশত মামলা দায়ের করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অর্থবাণিজ্য করে চলেছে। তার ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এ ছাড়া কিছুদিন পূর্বে আমার ৫ম ভাই মোঃ দাউদ আলী খানকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কারাভোগ করিয়েছে। মাত্র তিন-চারদিন পূর্বে সে জামিনে বাড়িতে আসলে আবরো তাকে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৭৫ গ্রাম গাঁজা একটি বোতলে করে তার বসত বাড়ির পিছনের বারান্দায় রেখে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়ে মাদক মামলায় আবারো কারাগারে পাঠায়। এ ছাড়া তার স্ত্রীকে চরিত্রহীন হিসেবে চিহ্নিত করে এলাকা ছাড়া করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তার ভয়ে এলাকার শান্তিপ্রিয় নিরীহ মানুষ আজ অতিষ্ঠ। আমার পরিবারের সদস্যরাও আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।