হেলমেট ও মাস্ক পরিহিত অবস্থায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) দুইটি আবাসিক হলে মধ্যরাতে প্রবেশ করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে ১০ শিক্ষার্থীকে আহত করার ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে।
সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. খোরশেদ আলম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাতের ঘটনার তদন্তে গঠন করা কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তদন্ত কমিটিতে ববি’র হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের বিভাগীয় প্রধান ড. হারুন-অর রশিদ প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অপর চার সদস্য হলেন-দুই হলের টিউটর রাকিবুল ইসলাম ও তানভীর কায়ছার, সহকারী প্রক্টর সাদিকুর রহমান ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের রাহাত হোসাইন ফয়সাল। প্রক্টর আরো বলেন, হামলার সাথে জড়িতরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বঙ্গবন্ধু আবাসিক হলের প্রভোষ্ট মো. আরিফ হোসেন বলেন, হলের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে অবৈধ ছাত্রদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই কথা জানিয়ে শের-ই বাংলা আবাসিক হলের প্রভোষ্ট মো. জাফর মিয়া বলেন, অবৈধরা হল না ছাড়লে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হামলায় আহত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতা অমিত হাসান রক্তিম বলেন, গত ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১১টার দিকে মুবাশ্বির রিদম, রিয়াজ মোল্লা, তমালসহ তাদের ৪০/৫০ জন সহযোগি হেলমেট ও মাস্ক পরে দুইটি আবাসিক হলে প্রবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় গুরুত্বর আহত ছয়জনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রক্তিম আরও বলেন, যে পক্ষটি হামলা চালিয়েছে তারা সবাই বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘসময় ক্যাম্পাসের হলগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। তবে সিটি নির্বাচনে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বিজয়ী হওয়ার পর তারা অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পরে। পরবর্তীতে আধিপত্য বিস্তারের জন্য সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী ওইসব ক্যাডাররা বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এরপর হামলাকারীরা দুটি হলেরই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।
অপর গ্রুপের ফাতাহুর রাফি বলেন, শনিবার রাতে রক্তিম ও বাকীর নেতৃত্বে বহিরাগতরা একটি পিকআপে অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসে তাদের মারধর করেছে। রাফি আরও বলেন, রক্তিমের ছাত্রত্ব নেই। বাকী প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হয়েছে।
মহানগর পুলিশের বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস নাগ বলেন, এখন পর্যন্ত হামলার ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।