শক্তিশালী ম্যালওয়্যার ভাইরাস দিয়ে বাংলাদেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাইবার আক্রমণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিতে যে ম্যালওয়্যার ভাইরাসটি ব্যবহৃত হয়েছিল তার চেয়ে শক্তিশালী ভাইরাস হচ্ছে এটি। বাংলাদেশে এর অবস্থান ও সাইবার হামলার চেষ্টা নিয়ে আলোচনাও চলছে। সাইবার হামলায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই), ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সাইবার জগতের ওপর হামলার হুমকি দিয়েছে হ্যাকারদের একটি দল। তারা সম্ভাব্য হামলার তারিখ হিসেবে ১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করেছে। দেশের সাইবার নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থা বিজিডি ই-জিওভি সিআইআরটি ২০১৬ সাল থেকে প্রায় ৫ হাজার ৫৭৬টি সাইবার অ্যাটাকের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বিজিডি ই-গভ সার্ট জানিয়েছে, তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় একই মতাদর্শে প্রভাবিত বেশ কয়েকটি হ্যাকার দলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা অবিরাম বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে নিয়মিত সাইবার আক্রমণ পরিচালনা করে আসছে। বিজিডি ই-গভ সার্ট তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে স্ক্রিনশট দিয়েছে, তাতে দেখা যায়, হুমকিদাতারা নিজেদের ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠী বলে দাবি করেছে। সাইবার হামলা এড়াতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু পরামর্শ দিয়েছে সার্ট। সেগুলো হলো ২৪ ঘণ্টা বিশেষ করে অফিস সূচির বাইরের সময়ে নেটওয়ার্ক অবকাঠামোতে নজরদারি রাখা এবং কেউ তথ্য সরিয়ে নিচ্ছে কি না, তা খেয়াল রাখা। ইনকামিং এইচটিটিপি/এইচটিটিপিএস ট্রাফিক বিশ্লেষণের জন্য ফায়ারওয়াল স্থাপন এবং ক্ষতিকারক অনুরোধ এবং ট্রাফিক প্যাটার্ন ফিল্টার করা। ডিএনএস, এনটিপি এবং নেটওয়ার্ক মিডলবক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিসেবা সুরক্ষিত রাখা। ব্যবহারকারীদের ইনপুট যাচাই করা। ওয়েবসাইটের ব্যাকআপ রাখা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সচেতনতার অভাবের কারণে সাইবার অ্যাটাক বাংলাদেশে ক্রমাগত হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকিং ট্রোজান ট্রিকবটের মতো ম্যালওয়্যার একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণ, অ্যাকাউন্টের প্রমাণপত্র ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে-এমন ঝুঁকি অনেক বেড়েছে। বর্তমানে এই ভাইরাসের মাধ্যমে হ্যাকাররা কম্পিউটার, সার্ভার বা প্রতিষ্ঠানের পুরো নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। ফলে হ্যাকার গ্রুপের সঙ্গে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সমঝোতা করে সিস্টেমসকে পুনরুদ্ধার করতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে অনেকে। এ ধরনের সাইবার হামলা থেকে নিরাপদ থাকতে সংশ্লিষ্টদের আরও অধিক সচেতন ও তৎপর হতে হবে। তা না হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো বড় ধরনের বিপদের সম্মুখীন হবে। সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানকে এখন তাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত মনিটরিং করা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণসহ সতর্ক থাকতে হবে।