পাবনার সুজানগরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কমিশন বাণিজ্য থামছে না। এ বছরও উপজেলার অধিকাংশ বিদ্যালয় বিভিন্ন প্রকাশনীর কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে শিক্ষার্থীদের বুক লিস্টে বই নির্দিষ্ট করে দিয়ে কিনতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে বিভিন্ন শ্রেণির গ্রামার বই শিক্ষকদের দেওয়া বুক লিস্ট অনুযায়ী কিনতে হয়েছে। এ ছাড়া গাইড বইতো আছেই। প্রায়ই লেকচার, পাঞ্জেরী, নবপুঁথিঘর, আলফা এবং জুপিটরসহ বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিকে উপজেলার বড় বড় স্কুল গুলোতে ভীড় ধরনা দিতে দেখা যায়। এসব বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাদের প্রকাশনীর গাইড বই চালানোর স্বার্থে শিক্ষকদের হাতে হাজার, হাজার টাকার ফ্রি বইসহ অন্যান্য উপহারসামগ্রী তুলে দেয় বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানায়। অনেক বিক্রয় প্রতিনিধি আবার শিক্ষকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়েও ফ্রি গাইড বই এবং উপহার সামগ্রী দিয়ে আসেন। শুধু তাই না ওই সকল প্রকাশনী একই উদ্দেশ্যে তাদের খরচে শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক এবং বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও তৈরী করে দিয়ে থাকেন। ফলে শিক্ষকরা উৎকোচের ওই টাকা এবং ফ্রি গাইড বই ও উপহার সামগ্রী যায়েজ করতে শিক্ষার্থীদের ওই সকল প্রকাশনীর গাইড ও গ্রামার বই কেনার নির্দেশ দেন। অথচ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি নিয়ে নিজেরা মানসম্মত প্রশ্ন তৈরী করে সকল পরীক্ষা নিবেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমত মানসম্মত প্রকাশনীর বই কিনতে পারবেন। কিন্তু এখানে কোন নিয়মই মানা হচ্ছেনা। বিশেষ করে মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের উদাসীনতার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো ওই দুর্নীতি ও অনিয়ম বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী অভিভাবকরা জানান, ওই সকল প্রকাশনী তাদের বই চালাতে শিক্ষকদের লক্ষ লক্ষ টাকা উৎকোচ দেন। আর প্রকাশনী কর্তৃপক্ষ ওই টাকা তুলতে ৫‘শ টাকা দামের বইয়ের মূল্য নির্ধারণ করেন ৭‘শ থেকে ৮‘শ টাকা। আর আমরা অভিভাবকরা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে চড়া দামের ওই বই কিনে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন এ সমস্যা একক কোন উপজেলার নয়, এ সমস্যা সারা বাংলাদেশের। কিন্তু তার পরও আমি চেষ্টা করবো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার।