সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুনের ১১ বছর পাঁচ মাস পূর্ণ হলো। এত বছরেও আলোচিত এই জোড়া খুনের মামলার তদন্তই শেষ করতে পারেনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এখনো জানা যায়নি কী কারণে, কারা হত্যা করেছে তাঁদের। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য (র্যাব) সংস্থাটি আদালতে বারবার সময় চেয়েছেন। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কেন যেন সামনে এগোচ্ছে না। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে’ অপরাধী গ্রেপ্তারে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই আশ্বাসের পর এখন পর্যন্ত তদন্তের জন্য সময় নেয়া হয়েছে ১০০তম বার। তদন্ত থমকে আছে একই বৃত্তে। শুধু প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পরিবর্তন ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে র্যাপিড আ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আদালতের নির্দেশে ২০১৭ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয় একটি প্রতিবেদন জমা দেয় র্যাব। এরপর আর কোনো অগ্রগতির প্রতিবেদনও দেয়া হয়নি। এত বছরেও তদন্ত শেষ না হওয়ার বিষয়ে কারণ হিসেবে জানা যায়, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে র্যাব এই সাংবাদিক দম্পতির মামলাটি তদন্ত করছে। তবে একটি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য যত ধরনের উপাদান প্রয়োজন হয়, তার সব কটি এখনো সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ফলে আদালতে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সাগর-রুনি খুনের প্রকৃত কারণ কী, কারা খুনে জড়িত, সেটি সুনিশ্চিতভাবে বলার মতো সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ এখনো র্যাবের কাছে আসেনি। তবে তথ্য সংগ্রহ চলমান রয়েছে। যেখানে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন (প্রয়াত) বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে। খুনের দুই দিন পর পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহামুদ খন্দকারও বলেছিলেন, তদন্তের ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তবে এই জোড়া খুনের সাড়ে ১১ বছরেও কেন তদন্তের অগ্রগতি নেই। তাই সরকার ও উচ্চ আদালতের কাছে আবেদন থাকবে, তদন্ত সংস্থাকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া বা র্যাব যদি কিছু করতে না পারে, তাহলে অন্য কোনো সংস্থাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হোক। দীর্ঘ সময়েও অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে না পারাটা নিঃসন্দেহে হতাশার এবং দুঃখজনক ঘটনা। সাংবাদিক খুন করেও বিচারের বাইরে থেকে যাচ্ছেন খুনিরা।