এস এম সুলতান ছিলেন বাংলার মাটি ও মানুষের শিল্পী। চিত্রা নদীর পাড়ে ঝাঁকড়া চুলের এক নিবিষ্ট মানব বাংলার গ্রামীণ জীবন, কৃষক, আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য, দ্রোহ-প্রতিবাদ এবং প্রতিকূলতার মধ্যেও টিকে থাকার অনন্ত সংগ্রাম করেছিলেন। চোখের পুরু লেন্সের চশমা হেলে পড়ছে, তবুও থামেনি শিল্পীর হাত। সেই চোখে কী অদ্ভুত এক জ্যোতির ছাপ। সচরাচর আমরা দেখি কৃষকের রুগ্ন চেহারা, মেদহীন এক শীর্ণকায় প্রতিকৃতি, কৃশ। আর সেই পুরু লেন্সের মধ্য দিয়ে সে চোখ দেখে বলিষ্ঠ, পেশিবহুল কৃষকের ছবি। আঁকতে থাকেন বিদ্রোহ, চিরনতন অন্নদাতার প্রকৃষ্ট ছবি। অপূর্ব বাঁশি বাজাতেন। বাজাতেন তবলা। শাড়ি পরে পায়ে ঘুঙুর পায়ে নাচতেন আপন খেয়ালে। বিশ্বখ্যাত কেমব্র্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় যখন তাকে 'ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট' সম্মাননা প্রদান করল তখনো তিনি বললেন, 'শিল্পের কখনো পুরস্কার হয় না। শিল্পের ভার তো প্রকৃতি স্বীয় হাতে প্রদান করে।' এভাবেই বললেন খুলনা আর্ট স্কুলের আলোচনা সভায় বক্তারা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা আর্ট স্কুল মিলনায়তনে এস এম সুলতানের শত তম জন্মদিন উপলক্ষে এস এম সুলতানের কর্মজীবনের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা আর্ট স্কুলের পরিচালক শিল্পী বিধান চন্দ্র রায়। সভা পরিচালনা করেন গুণীজন স্মৃতি পরিষদের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন সমাজসেবক মাসুদ মাহমুদ, রূপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানস রায়, সরকারি মডেল বহুমূখী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ কামাল হোসেন, দৈনিক জন্মভূমির মফস্বল সম্পাদক মোরশেদ নেওয়াজ শিপলু, খুলনা আর্ট স্কুলের শিক্ষক প্রশান্ত হালদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এস এম সুলতানের অস্থায়ী বেঁদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অতিথিবৃন্দ। সভায় এস এম সুলতানের নামে খুলনায় একটি সড়কের নামকরণ করার দাবি জানানো হয়।