রাজশাহীর তানোরে প্রতিমন্ত্রীর বউ পরিচয়ে লাড্ডু হাতে এলাকায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন আয়েশা আক্তার ডালিয়া। তার এমন কান্ডে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে একই সাথে জনসাধারণের মধ্যে হাসির খোরাকের পাত্রে পরিনত হয়েছেন তিনি।
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসন ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত এই আসনটি একসময় আ' লীগের দখলে থাকলেও বিএনপির দখলে ছিলো ১৫ বছর। বিএনপির হেবিওয়েট প্রার্থী হিসেবে পরিচিত এবং ৫ বছরের প্রতিমন্ত্রী ও ৫ বছরের ক্যাবিনেট মন্ত্রী থাকা অবস্থায় এই আসনটি বিএনপির ঘাটিতে পরিনত হয়েছিলো।
বর্তমান সাংসদ আলহাজ¦ ওমর ফারুক চৌধুরী গত প্রায় ২৩ বছর ধরে হাটি হাটি পা পা করে সেই বিএনটির ঘাটিকে ভেঙ্গে তছনছ করে আ' লীগের ঘাটিতে পরিনত করে ১৪ বছরের বেশী সময় ধরে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়ে অধ্যবদি তিনি মাঠ দখলে রেখে মাঠেই অবস্খান করছেন।
অথচ কোথা থেকে উড়ে এসে নেতা-কর্মি ও সমর্থক ছাড়াই এলাকায় প্রতিমন্ত্রীর স্ক্রী পরিচয় দিয়ে রাড্ডু হাতে জনসাধারণের মাঝে বলে বেড়াচ্ছেন এলাকায় কোন উন্নয়ন হয়নি।
তার এমন কথায় এলাকার নেতা-কর্মি ও সমর্থকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। একই সাথে আয়েশা আখতার ডালিয়াকে নিয়ে জনমনে মুখরুচোক গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।
জনসাধারণ বলছেন, পরারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে এামলাকার জনসাধারণকে লাড্ডু খাওয়াচ্ছেন এবং বলছেন এলাকায় কোন উন্নয়ন হয়নি আমি আমি এমপি প্রার্থী আপরারা আমার সাথে থাকেন আমি উন্নযন করবো।
অথচ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম একদিনও তার সাথে আসলেন না বা তাকে পরিচয় করিয়ে দিরেন না কেনো? সত্যি উনি এখনো শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আছেন? নাকি অন্য কিছু এমন প্রশ্ন ঘিমুর পাক খাচ্ছে জনসাধারণের মুখে মুখে।
তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অথচ তার এই বক্তব্য সরাসরি আওয়ামী লীগ বিরোধী বলে মনে করছে নেতা-কর্মি ও সমর্থকরা। তার এমন কান্ডে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
রাজশাহী-১ নির্বাচনী এলাকায় ডালিয়ার বাবা ও দাদার বাড়ি তাই তিনি এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন। তিনি তার স্বামীর নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন না আসছেন তানোর গোদাগাড়ীতে।
সচেতন মহলের ভাষ্য, লাড্ডু হাতে ডালিয়া যখন এলাকায় এসে জনসাধারণকে লাড্ডু খাওয়াচ্ছেন তখন জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের একজন নেতাকেও তার সাথে দেখা যায় না।
তার সাথে অপরিচিত কিছু হোমড়া চোমড়া থাকেন আর তারা লাড্ডু খাওয়ানো মানুষের ছবি তোলেন। কখনো কখনো ওই হোমড়া চোমড়ারাও জনগনকে মিথ্যে বানোয়াট ভিত্তিহীন কথা বলছেন যাদের কোনদিন এলাকায় কেউ দেকেননি।
বরেন্দ্র অঞ্চলের বিশাল আয়তনের দুর্গম পল্লী বেষ্টিত এই নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে নতুন কারো পরিচিত হতেই পাঁচ বছর সময় পেরিয়ে যাবে।
অন্যদিকে পাঁচবার দলীয় মনোনয়ন, একবার প্রতিমন্ত্রী, তিনবার নির্বাচিত সাংসদ, একবার জেলার সভাপতি ও সম্পাদক এমন পরীক্ষিত নেতৃত্ব ফারুক চৌধুরীকে কেনো মনোনয়ন বঞ্চিত করে ডালিয়াকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার ব্যাক্ষা এই জনপদের মানুষ জানতে চাই।
কারণ পরীক্ষিত নেতৃত্বের প্রতিপক্ষ হবে পরীক্ষিত নেতৃত্ব। এখন যে কেউ উড়ে এসে জুড়ে বসে যদি পরীক্ষিত নেতৃত্ব সরিয়ে নিজে সেই স্থান নিজে নিতে চাই, তাহলে তার সেই চাওয়াই তো অপরাধ বা সীমালঙ্ঘন বলে মনে করছে তৃণমুল।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আয়েশা আক্তার ডালিয়া এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী দাবি করে মাঝে মধ্যে তানোরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দু’একজনের সঙ্গে কথা বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছে গণসংযোগ।
কিন্ত্ত তানোরের দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউপির ৮১ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল কোনো নেতাকর্মী তার সঙ্গে নাই, তাহলে তিনি ভোট করবেন কাদের নিয়ে, আর তার সঙ্গে আছে কারা এসব বিবেচনায় ডালিয়াকে নিয়ে সাধারণের মাঝে নেতিবাচক আলোচনা ও নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সূত্রপাত বলে মনে করছে সাধারণ নেতাকর্মীরা।
সূত্র জানায়, রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখানো সাংসদ ফারুক চৌধূরীর বিকল্প তেমন কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠেনি সেই সম্ভবনাও নাই।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরীক্ষিত তৃণমূলের আস্থা ও ভরসার প্রতিক এমপি ফারুক আবারো আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন সেটা প্রায় ৬ মাস আগেই নিশ্চিত হয়েছে। অথচ কোনো ভাবেই দলীয় মনোনয়ন পাবেন না তাকে কখানো কোনো অবস্থাতেই তৃণমূল মেনে নিবে না।
কিন্ত্ত মনোনয়ন পাবেন না এটা নিশ্চিত হয়েও একশ্রেণির কথিত নেতা এমপি ফারুকের মনোনয়ন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে ডালিয়াকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে মাঠে নামিয়ে আওয়ামী লীগের অত্যন্ত সম্ভবনাময় গোছানো মাঠ নস্ট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রয়াস করছে বলে তৃণমুলের অভিমত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক জৈষ্ঠ নেতা বলেন, এমপি ফারুক চৌধুরীর লেজ কাটতে এক প্রতিমন্ত্রী বিপদগামী কিছু নেতার সমন্বয়ে সেভেনস্টার সৃষ্টি করেছিল।
কিন্ত্ত কথিত সেভেনস্টার হারিয়ে গেছে এখন প্রতিমন্ত্রীর নিজের লেজেই পা পড়েছে। ফলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে, এখন তিনি আবারো ফারুক চৌধুরী বিরোধীতার নামে আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করছে।
এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও আয়েশা আক্তার ডালিয়ার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার কোনো বক্তব নেয়া সম্ভব হয়নি