ম্যাচে গোল হয়নি একটিও, কিন্তু কমতি ছিল না ঘটনার। রেফারি লাল কার্ড দেখালেন তিনটি, এর একটি বার্সেলোনা কোচ শাভি এর্নান্দেসকে। ফাউলের পর ফাউল হলো ম্যাচে। সঙ্গে লাল কার্ড ও কয়েক দফায় উত্তেজনার পরিস্থিতি মিলিয়ে ৯০ মিনিটের ম্যাচের সঙ্গে যোগ হলো আরও মিনিট বিশেক। সব মিলিয়ে বিশৃঙ্খল এক ম্যাচ। সবকিছুর জন্য ম্যাচ শেষে রেফারিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বার্সেলোনা কোচ। গেতাফের মাঠে রোববার ড্র করে লা লিগায় শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করে বার্সেলোনা। যদিও সুযোগ বেশ কিছু পেয়েছিল লিগ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি তাদের ফরোয়ার্ডরা। বারবার ফাউলে ম্যাচের স্বাভাবিক গতিও বাধাগ্রস্থ হয় বারবার। প্রথমার্ধের শেষ দিকে লাল কার্ড দেখেন বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রাফিনিয়া। ৫৭তম মিনিটে গেতাফের হাইমে মাতা লাল কার্ড দেখলে দুই দলই নেমে আসে ১০ জনে। রেফারির সঙ্গে তর্ক করার জন্য ৭১তম মিনিটে লাল কার্ড দেখানো হয় শাভিকে। ম্যাচ শেষে বার্সেলোনা কোচ ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রেফারিং নিয়ে। নিজের লাল কার্ড নিয়ে তার আপত্তি আছে তো বটেই, তবে তিনি বেশি ক্ষুব্ধ এত বেশি ফাউল ধরা নিয়ে। “রেফারিই সবকিছু এতটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এটাই সত্যি কথা। আমি তাকে বললাম যে, ‘আপনি খুব বেশি ফাউল ধরছেন’, এজন্য তিনি আমাকে মাঠ থেকে বের করে দিলেন! আমার লাল কার্ড কোনো ব্যাপার নয়, কঠিন একটি প্রতিপক্ষের সঙ্গে আমরা সম্ভব সবকিছুই চেষ্টা করেছি। কিন্তু মাত্র এক পয়েন্ট পেয়েছি, যা যথেষ্ট নয়। খুবই হতাশার এটি।” “আরও হতাশার ব্যাপার যে, সে (রেফারি) ২০ মিনিট অতিরিক্ত খেলিয়েছে। আমরা নিজেদের হাস্যকর হিসেবে উপস্থাপন করছি। খুবই অদ্ভুতৃ।” ম্যাচের শেষ দিকে যোগ করা সময়ে রোনাল্দ আরাউহোকে ফাউল করায় পেনাল্টি পেতে পারত বার্সেলোনা। কিন্তু ভিএআর দেখে বিল্ড-আপে ‘হ্যান্ডবল’ দেখতে পান রেফারি। তবে শাভি সরাসরিই বলেন, ‘আমার চোখে কোনো হ্যান্ডবল ধরা পড়েনি। তারা বলেছিলেন, পরিষ্কার হ্যান্ডবল ছাড়া তারা বাঁশি বাজাবেন না।” লিগ শুরুর আগে যা আলোচনা হয়েছে, রেফারি তা অনুসরণ করেননি বলেই অভিযোগ করলেন শাভি। লা লিগার ভাবমূর্তি ও পরিচিতির জন্যও এসব ক্ষতিকর বলে মনে করেন বার্সেলোনার এই কিংবদন্তি। “কদিন আগে রেফারিদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক ছিল এবং সেখানে কথা হয়েছিল যে, এবার প্রথম যে পরিবর্তনগুলো তারা আনবেন, এর মধ্যে একটি হবে কোচদেরকে আরও বেশি বুঝতে পারা। কারণ, খেলার সময় কোচরা খুবই টেনশনে ও চাপে থাকেন। রেফারিদের সঙ্গে সেই সভা আমার পছন্দ হয়নি, আজকে যা হয়েছে, তাও পছন্দ হয়নি।” “এজন্যই লোকে ফুটবল দেখতে চায় না এখন। আজকে যা হয়েছে, এটি কোনো ম্যাচ ছিল না। যা হয়েছে, তা (ফুটবলের জন্য) অপমানজনক। রেফারিই এটি হতে দিয়েছেন, আর কোনো কারণ নেই। তারা অনেক বেশি ধরেছেন (ফাউল)। লা লিগাকে আমরা আকর্ষণীয় করে তুলতে চাই ও ছড়িয়ে দিতে চাই, কিন্তু সেখানে এরকম হলে তা কোনো কাজের কিছু নয়।” ২০১৯ সালের পর লা লিগায় গেতাফের মাঠে আর জিততে ও গোল করতে পারেনি বার্সেলোনা। এই সময়ে তিনটি ম্যাচ শেষ হয়েছে গোলশূন্য সমতায়, একটিতে হেরেছে তারা ১-০ গোলে।