রাজশাহীর পুঠিয়ায় একটি প্রভাবশালী জমি দখল নিতে এক ভিক্ষুক নারী ও তার দুই প্রতিবন্ধি মেয়েকে মারধর করেছে। সেই সাথে তাদের ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। সোমবার ১৪ আগস্ট সকাল ১০টায় উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হচ্ছে ওই গ্রামের মৃত আবুল বাশারের স্ত্রী ও ভুক্তভোগি জাহানারা বেগম (৭০), তার দুই মেয়ে প্রতিবন্ধি আয়শা খাতুন (৩৫) ও পান্না খাতুন (৩৩)। ভুক্তভোগি জাহানারা বেগম বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে তার স্বামি বাড়ির প্রায় এক বিঘা জমি কেনেন। এরপর থেকে তারা পরিবারসহ সেখানে বসবাস করে আসছে। গত কয়েক বছর আগে তার স্বামি মারা যায়। আর এরপর প্রতিবেশী প্রভাবশালী শহীদ মিয়া, তার পিতা হারেজ মিয়া ও ইসমাইল হোসেন ওই জমির মালিকা দাবি করে। এ বিষয়টি পরে কোটে মামলা করা হয়। কোট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। তিনি বলেন, এই ভিটে ছাড়া মাথা গোঁজার জায়গা নেই। দুটি প্রতিবন্ধি মেয়ে নিয়ে মানুষের দুয়ারে ভিক্ষা করে কোনো মতে দিন পার করছি। আর আজ তারা মেরে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে সব লুটপাট করেছে। এ বিষয়ে গত তিনদিন আগে থানায় জিডি একটি করেছি, কিন্তু পুলিশ কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। প্রতিবেশী আবদুল মান্নান বলেন, গত দুইদিন আগে অভিযুক্ত শহীদ ও ইসমাইল মিলে ওই বিধবা ও ভিক্ষুক মহিলার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর সোমবার সকালে অভিযুক্তরা লোকজন নিয়ে ভুক্তভোগিদের মারধর করে। পরে তাদের দুইটি ঘর ভেঙ্গে সব কিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এখন ভুক্তভোগিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধিন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শহীদ ও ইসমাইল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা জমির মালিকানা দাবী করে বলেন, ওই নারী জোরপূর্বক জমি দখল করে রেখেছে। আমরা তাকে চলে যেতে বলেছি। ভুক্তভোগিদের মারধর করে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, এ বিষয়টি তাদের জানা নেই। ভালুকগাছি ইউনিয়নের ওই ওয়ার্ডের সদস্য আয়েন উদ্দীন বলেন, যদ্দুর জানি জমির মালিকানা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ বিষয়ে কোটে মামলাও হয়েছে। তিনি বলেন, ভুক্তভোগি ওই মহিলা একজন ভিক্ষুক। তার দুই মেয়ে প্রতিবন্ধি। দুই মেয়েকে নিয়ে ওই মহিলা মানুষের দুয়ারে হাত পেতে কোনো মতে দিনপার করেন। আর এই পরিবারকে এভাবে মারধর ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা উচিত হয়নি।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ভুক্তভোগিদের এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ আসলে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ডায়েরির তদন্ত প্রতিবেদন কোটে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।