কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের ৮ দিনেও ব্যবস্থা নেয়নি থানা পুলিশ। থানায় অভিযোগ দিতেও গুণতে হয়েছে কয়েক হাজার ৫শত টাকা। বুধবার (১৬ আগস্ট) প্রতিদিনের সংবাদকে দেয়া ভিডিও এক স্বাক্ষতকারে এ অভিযোগ তুলে ধরেন নির্যাতিত কলেজ ছাত্রীর বাবা। এর আগে গত ৮ আগস্ট মেয়ের উপর চালানো পাশবিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রীর বাবা। অভিযুক্ত স্বাধীন (২২) ওই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শঠিবাড়ি এলাকার প্রভাবশালী সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার শঠিবাড়ি গ্রামের এক কলেজ ছাত্রীকে (১৮) প্রায় সময় কু প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যাক্ত করে আসছেন প্রতিবেশি প্রভাবশালী সিরাজুল ইসলামের ছেলে স্বাধীন (২২)। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার পরিবারকে জানালে তারা স্বাধীন ও তার পরিবারকে জানিয়ে সতর্ক করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেন স্বাধীন।
গত ৭ আগস্ট রাতে এক আত্মীয়ের মৃত্যুর কারণে বাড়ির সবাই জানাজায় যাওয়ায় বাড়িতে একা ছিলেন ওই ছাত্রী। রাত ৯টার দিকে ওই ছাত্রী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাহিরে বের হলে বাড়ির পাশে ওৎপেঁতে থাকা স্বাধীন কলেজ ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে জোর পুর্বক ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। সম্ভ্রম রক্ষায় হুড়োজুড়োর এক পর্যায় মুখ খুলে গেলে কলেজছাত্রীর আত্মচিৎকারে তার ছোট ভাই বেরিয়ে আসে স্বাধীনকে আটক করে।
আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বাধীনের পরিবার ছুটে এসে কলেজছাত্রী ও তার ভাইকে মারপিট করে স্বাধীনকে ছুটে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন ৮ আগস্ট স্বাধীনকে প্রধান করে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কলেজছাত্রীর বাবা।
অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি পুলিশ। ফলে দীর্ঘ ৮দিন ধরে মেয়েকে নিয়ে থানার বারান্দায় নিস্ফল ঘুরেও হতাশ বাদি। উল্টো অভিযুক্ত স্বাধীনের পরিবারের হুমকীতে পরিবার নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন বলে বাদির দাবি।
নির্যাতিত কলেজছাত্রীর বাবা বলেন, মেয়েকে নিয়ে থানায় গেলে ওসি স্যার সব শুনে লিখিত অভিযোগ নেন। তদন্ত করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করে মামলা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫হাজার টাকা নেন ওসি স্যার। ওসি স্যারের নির্দেশ মত তদন্ত অফিসারকেও দেড় হাজার টাকা দিয়েছি। এখন শুধু টালবাহনা করছে। আসামি গ্রেপ্তার তো দুরের কথা মামলায় নিচ্ছেন না। শুনেছি, আসামিরা মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন। টাকা দিয়েও যদি বিচার না পাই তো যাব কোথায়? গরিবের মেয়ের কি ইজ্জতের মুল্য নেই?
টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, স্থানীয় ভাবে আপস মিমাংসার চেষ্টা করছে জন্য অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি। মামলার বিষয়ে আমি কারও কাছে টাকা গ্রহন করিনি এবং কোন অফিসারকেও টাকা দিতে বলি নি। টাকা নেয়ার বিষয়টি সম্পুর্ন মিথ্যে।