স্থানীয় পর্যায়ে কিশোর-কিশোরীদের যৌণ ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা সহজলভ্য করাসহ নয় দফা দাবিতে বরিশালে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সরকারি প্রতিনিধিদের কাছে যুবকরা নয়টি দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো-স্থানীয় পর্যায়ে কিশোর-কিশোরী ও যুববান্ধব যৌণ ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা ও তথ্য সরকারি সকল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সহজলভ্য করা। একান্ত ও গোপনীয় পরিবেশে কিশোর-কিশোরী ও যুবকদের সাথে বন্ধুত্বসুলভ আচরণের মাধ্যমে স্বাস্থসেবা প্রদান করা। সব শ্রেণির কিশোর-কিশোরী ও যুবদের সঙ্গে সম্মানজনক ও নিরপেক্ষ আচরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা। লৈঙ্গিক পরিচয় বা তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া ও অন্যান্য) নির্বিশেষে সবার জন্য যৌণ ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা। কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কোথায় পাওয়া যায়, তা কিশোর-কিশোরী ও তাদের অভিভাবকদের জানানোর জন্য সরকারি পর্যায় থেকে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে আলোচনায় তারুণ্যের কন্ঠস্বর প্ল্যাটফর্মের সদস্যদের সম্পৃক্তকরা।
এছাড়াও কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন, সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে জেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ‘কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনা’ কমিটি গঠণ করে সক্রিয় করা। জরুরি ও উন্নত সেবার জন্য রেফারেল ব্যবস্থা শক্তিশালী করা। রেফারেল সেন্টারগুলো যেমন-উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ আরও জোরালো ও কার্যকর করা। এ ছাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে সরকারি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নিয়মিত এবং সক্রিয় করার দাবি করা হয়।
বরিশাল প্রেসক্লাবের হলরুমে বরিশাল মহিলা কল্যাণ সংস্থা (বিএমকেএস) ও তারুণ্যের কন্ঠস্বর প্লাটর্ফমের আয়োজনে ‘অধিকার এখানে, এখনই’ নারীপক্ষের সহযোগিতায় শনিবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সভায় উল্লিখিত দাবিগুলো তুলে ধরা হয়। বিএমকেএস’র পরিচালক কাওছার পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মিজানুর রহমান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বরিশালের উপ-পরিচালক শামীম চৌধুরী, জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর হোসাইন, সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত কাউন্সিলর কহিনুর বেগম প্রমুখ। তারুণ্যের কন্ঠস্বর প্লাটফর্মের সমন্বয়কারী ময়ূরী আক্তার টুম্পার সঞ্চালনায় সভার ধারণাপত্র পাঠ করেন সদস্য আলিফা।
সভায় বক্তারা বলেন, দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও পাঠ্যবইতে এই বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বয়সন্ধিকাল নিয়ে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক থাকে। এ বিষয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে আমাদের জানতে হবে বয়সন্ধিকালে আমাদের করণীয় কী। কৈশরকালীন সমস্যা সমাধানে বাবা-মায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এই সময় অতিক্রমে কিশোর-কিশোরীদের ভালো খাবার খাওয়ার পাশাপাশি যৌণ ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান দরকার। এজন্য জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি সচেতনতার বিকল্প নেই বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।