ভাই-ভাতিজাদের কথা রাখতে এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করেছেন তিনি। নিজের বিয়েটা করতে হচ্ছে একটু ভিন্নভাবে। ঘোড়ায় চড়ে সম্ভব না হলেও ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে হাজির হয়েছেন কনের বাড়িতে। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় এলাকায় পড়েছে হৈচৈ। ব্যতিক্রম আয়োজনের এমনই এক বিয়ে হয়ে গেল ঝিনাইদহের শৈলকুপায়।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর নিজ বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আগুনিয়া পাড়া থেকে বিয়ে করতে রওয়ানা হয়েছেন উম্মাদ আলীর একমাত্র ছেলে শহীদুল ইসলাম। একই উপজেলার ৭ টি গ্রাম পাড়ি দিয়ে কনের বাড়ি বেড়বাড়ি গ্রাম এলাকায়। রাজার বেশে বরসহ ৬ জনকে নিয়ে ছুটে চলছে টমটম। গাড়িটি সাজানো হয়েছেও বিয়ের গাড়ির মতো করে। যা দেখলে চোখ ফেরানো যাবে না। জোড়া ঘোড়া টগবগটগবগ করে ছুটে চলেছে বরকে নিয়ে। ব্যতিক্রম এমন আয়োজন দেখতে রাস্তাায় যেমন ভীড় করছে মানুষ। তেমনি ঘোড়ার গাড়ীর উপর বরকে দেখে অবাক হয়ে যায় কনের বাড়ির এলাকার লোকজন। এমন আলাদা আয়োজনে খুশী বর ও কনে পক্ষ উভয়ই।
বরের চাচাত ভাই সেলিম মিয়া জানান, ছোটবেলায় দাদা-দাদির কাছে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার গল্প শুনেছেন। প্রায় তিন যুগ আগে গরুর গাড়ি ও ঘোড়ার গাড়ি বা পালকিতে চড়ে মানুষ বিয়ে করতে যেত। কালের গর্ভে সেটি হারিয়ে গেছে। আজ হঠাৎ ঘোড়ার গাড়িতে বরযাত্রী দেখে মুগ্ধ হয়েছি। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম বিষয়টি দেখে অনুপ্রানিত হবে। এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করলে গ্রামীন ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে।
কনে ঝর্ণা খাতুন জানান, বিয়ে আসলে সবার জীবনেই একটি বিশাল বিষয়। সেখানে ব্যতিক্রম হলে তো আর কথাই নেই। তবে এমন আয়োজন হবে তা আমরা আগে থেকে জানতাম না।
বর শহীদুল ইসলাম জানান, লোকজ ঐতিহ্য ও বাবার ইচ্ছে অনুযায়ী টমটমে চড়ে বিয়ে করেছি। বিয়েতে টমটম গাড়ির ব্যবহার অনেককেই মুগ্ধ করেছে। গ্রামীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে যুবসমাজকে টমটমে বিয়ের আহ্বান জানান তিনি। বরের বাবা ব্যবসায়ী উম্মাদ আলী জানান, ছেলের শখে এমন বিয়ে। আমার একমাত্র ছেলে শহীদুল ও দুই ভাই-বোনের মধ্যে বড়কনের বাবা ব্যবসায়ী রাজ্জাক মন্ডল জানান, আমরা জানতাম না যে বর পক্ষ এমন ভাবে আসবে। ৬০ জন বর যাত্রী এসেছে। তার মধ্যে ৩টা মাইক্রো ও ১০টা মোটরসাইকেল এসেছে। আর বড় এসেছে টমটমে চড়ে।তিনি আরও বলেন, ৮০ হাজার টাকা দেনমোহরে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে।