খালেদা জিয়া শুধু এই উপমহাদেশের নন, এশিয়ার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন নেত্রী মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বন্দি করা হয় ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে। এখনও তিনি বন্দী আছেন। দ্রুত তাকে মুক্তি দিতে হবে। এখন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আল্লাহ না করুন, তার কিছু হলে সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। শনিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে পদযাত্রা-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মহাসচিব। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে এই পদযাত্রার আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে কাকরাইল মোড় ও শান্তিনগর মোড় হয়ে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয় পদযাত্রা। এদিকে একই দাবিতে শনিবার সারা দেশে মহানগর, জেলা উপজেলা পর্যায়ে পদযাত্রা করছে বিএনপি। সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। যেই দুই কোটি টাকার অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেই টাকা এখন ৮ কোটি টাকা হয়েছে। একই ধরনের মামলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে হয়েছিল। কিন্তু তাদের শুধু মুক্তিই দেওয়া হয়নি, মামলাও তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার অসাংবিধানিক ও অবৈধ মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা ১৫ বছর ধরে জনগণের কাঁধে চেপে বসে আছে। এরা এখন গণতন্ত্রের জন্য নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। মির্জা ফখরুল বলেন, এখনও সময় আছে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করবেন না, বাসা বাড়িতে হানা দিবেন না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। অবিলম্বে এক দফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ইস্পাতকঠিন মনোবল ধরে রেখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমরা আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। তাকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা মামলা-হামলাবাজ সরকারের বিদায়ের লক্ষ্যে এখানে পদযাত্রা করছি। এদের বিদায় নিতে হবে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না। আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তিনি কোনো অন্যায় করেননি। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বিচারিক আইন উপেক্ষা করে সাংবিধানিক আইন উপেক্ষা করে জেলে পাঠানো হয়েছে। শুধু মানুষের ভোটাধিকার লুটে নিয়ে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এটা করা হয়েছে। আজ খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত, তাদের বিচার হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট থেকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
নির্বাচন সংবিধান মোতাবেকই হবে: মেনন
এফএনএস: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নির্বাচন সংবিধান মোতাবেকই হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ দল বা রাষ্ট্রের এজেন্ডা অনুসারে সরকার পরিবর্তন হবে না। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, তা এদেশের স্বাধীনতাকামী ও গণতান্ত্রিক মানুষ যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করবে। ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীকে এ ব্যাপারে রাজপথে থেকেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। শনিবার বেলা ১১টায় বরিশাল শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত আইনজীবী সমিতির (এনেক্স ভবন) মিলনায়তনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলার বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেনন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে একতরফাভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের দুর্দশার শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়েছে। সরকারকে অবশ্যই এ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে এর প্রভাব আগামী জাতীয় নির্বাচনে পড়বে। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনে বরিশালের বাবুগঞ্জ-মুলাদী ও বানারীপাড়া-উজিরপুরের পার্টিকে সাংগঠনিকভাবে সুদৃঢ় করার নির্দেশ দেন মেনন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট টিপু সুলতানের সঞ্চালনায় বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও বরিশাল জেলার সভাপতি নজরুল হক নীলু। বক্তব্য দেন- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলার নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হল ফিরোজ, বাবুগঞ্জ উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হোসেন, উজিরপুর উপজেলার সভাপতি ফায়জুল হক বালি ফারাহিন, মুলাদি উপজেলার সভাপতি গফুর মোল্লা প্রমুখ। বর্ধিত সভা শেষে একটি মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।