রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করতে বা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পৃথিবীর অন্য কোথাও জীবন্ত মানুষ পোড়ানো হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, যেখানে জাতিগত সংঘাত হয়েছে, সেখানে (মানুষ পোড়ানো) হতে পারে। কিন্তু রাজনীতির নামে অন্তত গত দু-তিন দশকে বিশ্বের কোথাও এমন ঘৃণ্য নজির নেই; যা ২০১৩-১৪-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশে ঘটিয়েছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো রাজনৈতিক দল ইউরোপণ্ডআমেরিকায় এই মানুষ পোড়ানোর ঘটনা ঘটাতো, সেই রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হতো। তবে কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে রায় দিয়েছে পরপর পাঁচ বার। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তারা (বিএনপি) টায়ার-ফোর সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি অনেক আন্দোলনের চেষ্টা করেছে, ঢাকায় মহাসমাবেশও করেছে। আন্দোলনের বেলুনও ফুলেছে, কিন্তু সেই বেলুন এখন ফিউজ হয়ে গেছে। বিদেশিদের কাছে অনেক ধরনা দিয়ে বাংলাদেশের ওপর একটি চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই চাপ তৈরির অপচেষ্টাও এখন ডিফিউজড হয়ে গেছে। পত্র-পত্রিকা পড়লে আপনারা অনুধাবন করতে পারেন যে, বিদেশি চাপ ডিফিউজড, আন্দোলনের বেলুন ফিউজড। অর্থাৎ দেশের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হয়নি। এ সময় পুলিশ বাহিনীকে তাদের কাজের জন্য অভিনন্দন জানান ড. হাছান মাহমুদ। মন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনী যেভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে; এজন্য তাদের আন্তরিক ধন্যাবাদ। পুলিশ বাহিনী অবশ্যই আইন অনুযায়ী চলবে এবং বিধি অনুযায়ী চলতে গেলেই দেখা যাবে- কেউ রাজনীতির নামে মানুষ পোড়াতে পারে না। বঙ্গবন্ধু এবং সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিতুমীর, ক্ষুদিরাম বসু, সূর্যসেন-প্রীতিলতা, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র দসু, তারা বাঙালির স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন, নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, কিন্তু স্বাধীনতা আসেনি। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা এনেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে জন্যই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, আমাদের জাতির পিতা। ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এসবি) মো. মনিরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মুখ্য আলোচক হিসেবে সভায় বক্তব্য দেন। সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পুলিশ সদস্যদের স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পরিদর্শন করেন তথ্যমন্ত্রী।