রাজশাহীর তানোরে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবাসহ বিভিন্ন কার্ড দেয়ার নামে এক নারী মেম্বার ব্যাপক টাকা বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত ও বিচারের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট ২০ আগস্ট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু অভিযোগের ৫ দিন অতিবাহিত হলেও কোন কার্যকরি পদক্ষেপ নেননি ইউএনও। তাই হতাশ হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভুক্তভোগিরা। ফলে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া শুরু করেছেন মেম্বারসহ তার লোকজনরা। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে যতটুকু কার্ড বরাদ্দ পেয়েছেন তার কয়েকগুন ব্যক্তির নিকট টাকা আদায় করে ঘাপটি মেরে বসে আছেন মেম্বার রশিদা বেগম। তিনি উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার এবং ধানোরা গ্রামের আকবর আলীর স্ত্রী। টাকা আদায়ের ঘটনায় প্রতিবন্ধী আঙ্গুরা বেগম ও মোজাফফর নামের দুই ভুক্তভোগী চলতি মাসের ২০ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অঅিযোগে মেম্বারের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন ওয়ার্ডসহ ইউপিবাসী। ফলে প্রতিদিন এমন টাকা খোর জনপ্রতিনিধির বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন জনসাধারণ।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মহিলা মেম্বার রশিদা বেগম বলেন, সমাজসেবা অফিসের কিছু কর্মকর্তারা টাকা ছাড়া কোন কাজ করে দেন না। বিশেষ করে প্রয়াত মুনতাজ ও আলী নামের অফিসের লোক টাকা নিয়ে কাজ করেন। আমি যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি সবার কার্ড হয়েছে। আপনি কি টাকার বিনিময়ে কার্ড দিতে পারেন জানতে চাইলে তিনি জানান, ভোটের সময় কেউ তো বিনা টাকায় ভোট দেয়নি, তারা ভোটের সময় নিয়েছে আমি এখন নিব এবং টাকা ছাড়া কোন কাজ করব না বলেও দাম্ভিকতা দেখান তিনি।
অনেকে টাকা দিয়েও কার্ড পায়নি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে মেম্বার বলেন, আমার চাহিদামত যারা টাকা দিয়েছে তাদের কার্ড হয়েছে। আর যারা দেয়নি তাদের হয়নি। গত প্রায় এক দেড় বছর আগে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেয়ার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র ও ৫ হাজার টাকা করে নেয় মেম্বার রশিদা। কিন্তু এখনো কার্ড হয়নি। টাকা ফেরত চাইলে নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন মেম্বার।
ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী আঙ্গুরা ও মোজাফফর বলেন, আমাদের কাছ থেকে প্রায় এক দেড় বছর আগে মেম্বার কার্ড দিবে বলে ৫ হাজার টাকা করে নেয়। কিন্তু কার্ড করে দেয়নি। আমরা গরীব অসহায় প্রতিবন্ধী টাকা ফেরত চাইলে নানা ভাবে হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
ওয়ার্ড বাসীরা জানান, দুয়েক জনের কাছ থেকে টাকা নিলে হয়। অনেকের কাছে টাকা আদায় করেছে। এমনকি যারা কার্ড পাওয়ার যোগ্য তাদের কাছেও নিয়েছে। আর যারা যোগ্য নয় তাদের কাছ থেকেও আদায় করেছেন টাকা। এমন টাকা খোর জনপ্রতিনিধিদের জন্য সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য গুলোতে ছাই পড়ছে। এদের কে সাসপেন্ড, না হয় শাস্তি মুলুক কিছু করা দরকার, তাহলে অন্যরা ভয় পাবে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
এব্যাপারে উপজেলার কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি ফরহাদ বলেন, আমি ঘটনা শোনার পর যাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে ফেরত দিতে বলেছি এবং এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে মেম্বারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান এই চেয়ারম্যান।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সিফাতের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ করেন নি তিনি।